KMDA

সরোবরে হাঁস বাঁচাতে বছরে ১২ হাজার

গত বছর রবীন্দ্র সরোবরে ওই হাঁসটির মৃত্যুর পরে প্রশ্ন উঠেছিল, অন্য খাতে যে বরাদ্দ থাকে, তা থেকেও কি একটি হাঁসের চিকিৎসা করানো যেত না?

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২০ ১০:৩০
Share:

রবীন্দ্র সরোবরে এমন হাঁস রয়েছে ৫০টি। নিজস্ব চিত্র

একটি হাঁসের মৃত্যু চোখ খুলে দিল প্রশাসনের। তাই হাঁস বাঁচাতে ঘোষণা করা হল বার্ষিক বাজেট বরাদ্দ।

Advertisement

একটি বা দু’টি হাঁস নয়, রবীন্দ্র সরোবরে মোট ৫০টি হাঁসের জন্য বছরে খাবার এবং চিকিৎসা বাবদ প্রায় ১২ হাজার টাকা বরাদ্দ করলেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনে সেই বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়ানো যেতে পারে বলেও আধিকারিকেরা জানান। হাঁসের খাবার গম ও ধান কেনা ছাড়াও তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসায় যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্যই এই বিশেষ উদ্যোগ।

গত বছর রবীন্দ্র সরোবরে ওই হাঁসটির মৃত্যুর পরে প্রশ্ন উঠেছিল, অন্য খাতে যে বরাদ্দ থাকে, তা থেকেও কি একটি হাঁসের চিকিৎসা করানো যেত না? ওই চিকিৎসা যে ব্যয়বহুল, তা নয়। তা হলে সমস্যা কোথায়? টাকার জোগানে, না মানসিকতায়?

Advertisement

কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানান, গত বছর একটি হাঁস অসুস্থ হয়ে পড়ার পরে তার চিকিৎসা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল কর্তৃপক্ষকে। চিকিৎসার ঠিকঠাক পরিকাঠামো তো ছিলই না। তার পাশাপাশি কোন খাতে সেই চিকিৎসার খরচ দেখানো হবে, তা নিয়েই তৈরি হয়েছিল সংশয়। লাল ফিতের গেরোয় আটকে গিয়েছিল হাঁসের আরোগ্য লাভের আশা। সরোবরের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিক জানান, তিনি নিজেই উদ্যোগী হয়ে হাঁসটিকে শহরের বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান। পরে বেলগাছিয়া পশু হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাঁসটি মারা যায়। ওই ঘটনার পরেই টনক নড়ে প্রশাসনের।

সরোবর কর্তৃপক্ষ জানান, সেখানকার সৌন্দর্যায়নের অঙ্গ হিসেবেই হাঁসগুলিকে ছাড়া হয়েছিল। তাদের ভাল রাখাটা কর্তৃপক্ষেরই দায়িত্ব। পুষ্টিকর খাবার দেওয়া ছাড়াও হাঁসেদের মাঝেমধ্যেই চিকিৎসা করাতে হয়। সেই কারণেই এ বার তাদের জন্য আলাদা বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এখন সরোবরের পাড়ে এসে গেঁড়ি-গুগলির মতো জলজ প্রাণী খায় তারা। কর্তৃপক্ষের মতে, জলজ প্রাণীর পাশাপাশি গম, ধানের তুষ-সহ অন্যান্য খাবারও দিতে হবে হাঁসেদের। সেই খাবার কিনতে মাসে বরাদ্দ করা হবে ৮০০ টাকা। চিকিৎসা ও ওষুধ খাতে আলাদা করে আরও ২০০ টাকা বরাদ্দ করা রয়েছে। চলতি বছরের বরাদ্দ পুরো খরচ না হলে বাকি অর্থ পরবর্তী আর্থিক বছরের বরাদ্দের সঙ্গে যোগ করে দেওয়া হবে। এ বছর হাঁসগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হবে।

রবীন্দ্র সরোবরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুধীন নন্দী বলেন, ‘‘বাজেট বরাদ্দ থাকলে নজরদারিও থাকবে। কারণ, এর আগে জলাশয় থেকে অনেক হাঁস চুরি গিয়েছিল। দর্শকেরা যাতে হাঁস অথবা পাখিদের খাবার না দেন এবং তাদের না মারেন, তার জন্য নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে।’’ কেএমডিএ সূত্রের খবর, আপাতত রাজহাঁস-সহ মোট ৩৫টি হাঁস ছাড়া হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে আরও ১৫টি হাঁস ছাড়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement