Amphan

Tree replantation: আমপানে ধ্বংস হওয়া সবুজ কি আর ফিরবে না

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, ২০২০ সালে আমপানের বছরেই জুন, জুলাই ও অগস্ট মাসে চারা রোপণ করা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২২ ০৫:৪৮
Share:

ফাইল চিত্র।

আমপানের ঠিক দু’বছর পার হল। শহরে সেই তাণ্ডবের জেরে ভেঙে পড়া প্রায় পনেরো হাজার গাছের ক্ষতিপূরণ কতটা হল? কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগ মানছে, সবুজের ছোঁয়া ফেরাতে একপ্রকার নাজেহাল অবস্থা কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

কলকাতা পুরসভার দাবি, গত দু’বছরে হাজার পঞ্চাশেক চারা তারা রোপণ করলেও অর্ধেকই বেঁচে নেই। যত সংখ্যক গাছ বেঁচে, আগামী দিনে সেগুলিও থাকবে কি না, তা বড় প্রশ্ন। কারণ, চারা রক্ষণাবেক্ষণের পরিকাঠামো পুরসভার নেই বলে জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, শহরে চারা বসানোর উপযুক্ত স্থানাভাবও বড় সঙ্কট হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেদখল ফুটপাতের কারণে বিভিন্ন উদ্যানকেই বৃক্ষরোপণের জন্য বেছে নিতে পুরসভা বাধ্য হচ্ছে বলেও দাবি।

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, ২০২০ সালে আমপানের বছরেই জুন, জুলাই ও অগস্ট মাসে চারা রোপণ করা হয়েছিল। পুরসভার ১৬টি বরোর প্রত্যেকটিতে প্রায় ৭০০টি করে চারা উদ্যান বিভাগের তরফে লাগানো হয়েছিল। যার বেশির ভাগই ছিল নিম ও ছাতিম। সে সবের পঞ্চাশ শতাংশই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। গাছ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সংস্থার উদাসীনতায় এই পরিণতি বলে অভিযোগ পুর উদ্যান বিভাগের আধিকারিকদের। ঠিকাদারদের দাবি, মানুষের দায়িত্বজ্ঞানহীনতায় নতুন বসানো গাছ বাঁচানো যাচ্ছে না। উদ্যান বিভাগ এক সমীক্ষায় জানিয়েছে, বাসিন্দারা নিজেদের বাড়ি-গাড়ির নিরাপত্তায় গাছ কাটতে পিছপা হচ্ছেন না। নতুন চারা বাঁচানোর সদিচ্ছাও তাঁদের অধিকাংশেরই নেই।

Advertisement

উদ্যান বিভাগের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, শহরের ফুটপাতের বেশির ভাগ দখল হয়ে যাওয়ায় নতুন গাছ লাগানো যাচ্ছে না। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উপলক্ষে দফতরের একটি বৈঠকে স্থির হয়, যে সব ফুটপাত ১০-১২ ফুট চওড়া, সেখানে গাছ লাগিয়ে চারপাশে তিন ফুট পর্যন্ত বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা হবে। যাতে গাছ কেউ স্পর্শ করতে না পারেন। কিন্তু পুরসভার উদ্যানপালকেরা এ রকম ফুটপাত খুঁজে পাচ্ছেন না বলেই জানা যাচ্ছে। এক উদ্যানপালকের অভিযোগ, ‘‘ভবানীপুর এলাকায় চারা রোপণের কিছু দিন পরে গিয়ে দেখা যায়, খানিকটা বড় হওয়া গাছটি ঝলসে গিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিজের স্বার্থে গাছের উপরেই কেউ গরম জল ঢেলে দিয়েছেন। বিষয়টি থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছিল।’’

মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমারেরও অভিযোগ, ‘‘পুরসভা গাছ লাগালেও অনেক সময়েই মানুষের অবহেলায় তা নষ্ট হয়ে যায়। আমপানে সবুজের যে বিপুল ক্ষতি হয়েছে, তার পূরণে পুরসভার পাশাপাশি সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’’

পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন, আমপানে যেখানে গাছ পড়েছিল, অন্তত সেখানে গাছ বসিয়ে বাঁচানো জরুরি। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের মতে, ‘‘বৃক্ষরোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণে নাগরিকেরাও এগিয়ে না এলে বিপদ আসন্ন। গাছের উপকারিতা ভুলে যাওয়া বিপজ্জনক ইঙ্গিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement