ধাপার মাঠ। —ফাইল চিত্র
দৈনিক সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন জঞ্জাল জমে শহরে। যার মধ্যে প্রায় ২০০ মেট্রিক টন শুধু প্লাস্টিকই থাকে। সেই প্লাস্টিক ফেলা হয় ধাপায়। পরিবেশকর্মীরা জানাচ্ছেন, বছরের পর বছর ধরে অপচনশীল সেই বর্জ্য জমে ক্রমেই নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। এ বার সেই ক্ষতি রুখতে প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারের জন্য প্লান্ট করছে কলকাতা পুরসভা।
পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গত মেয়র পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। শীঘ্রই দৈনিক ১০ টন ক্ষমতা বিশিষ্ট একটি প্লান্ট ধাপায় তৈরি করা হবে। আগামী এক বছর পাইলট প্রকল্প হিসেবে সেটি কাজ করবে। সফল হলে প্রকল্পের মেয়াদ আরও বাড়ানো হবে। পুরসভা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, দৈনিক সংগৃহীত মোট আবর্জনার ৮০০ মেট্রিক টন শুধুই লোহালক্কড় এবং নির্মাণ বর্জ্য থাকে! বাকি ৩৭০০ মেট্রিক টনের ৬ শতাংশ প্লাস্টিক। প্রতিদিন সেই প্লাস্টিক ধাপায় জমে পরিবেশের বিপুল ক্ষতি হচ্ছে বলে পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন।
পুরসভা সূত্রের খবর, এই প্রকল্পের জন্যে কয়েক বার দরপত্র ডেকেও সাড়া মেলেনি। অবশেষে একটি সংস্থা ওই কাজে আগ্রহ প্রকাশ করায় তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুরসভা ওই সংস্থাকে ধাপায় ১০ হাজার বর্গফুট জায়গা দেবে। বাকি খরচ সংস্থার। ধাপায় জমা হওয়া প্রতিদিনের প্লাস্টিকের সঙ্গে বায়ো মাইনিংয়ের (জঞ্জালের পাহাড় খনন করে অপচনশীল বর্জ্য পৃথকীকরণের কাজ) পরের প্লাস্টিকও পুনর্ব্যবহার করার উপরে জোর দিতে চায় সংস্থা।
এক পুর আধিকারিক জানান, ওই প্লাস্টিক থেকে প্লাইবোর্ডের মতো কম্পোজিট বোর্ড তৈরি করা হবে। যা দিয়ে দরজা-জানলা করা যাবে। সে সব বিক্রি করে আয় করতে পারবে সংস্থা। কাজের দায়িত্ব নেওয়া ওই সংস্থার কাছে মহারাষ্ট্র সরকারের পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র রয়েছে বলে জানিয়েছে পুরসভা। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, সংস্থার কাজ সন্তোষজনক হলে তবেই প্লান্ট চালানোর মেয়াদ বাড়ানো হবে। পাশাপাশি, প্লাস্টিক বর্জনের জন্য মানুষকে সচেতন করতে বাড়িতে বালতি দিয়ে পচনশীল-অপচনশীল দ্রব্য আলাদা করার কথাও বলা হচ্ছে।