প্রতীকী ছবি।
সম্প্রতি গড়িয়ার একটি শ্মশানে দাবিদারহীন মৃতদেহ সৎকার করতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিল প্রশাসন। একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছিল, গাড়ি থেকে আঁকশি দিয়ে টেনে নামানো হচ্ছে ওই দেহগুলি। সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরে নিন্দার ঝড় ওঠে। তার পরেই সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, এ বার থেকে অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ কাচে ঢাকা গাড়িতে করে নিয়ে গিয়ে সৎকার করা হবে।
নতুন পদ্ধতিতে বৃহস্পতিবার প্রথম কলেজ স্ট্রিটের পুলিশ মর্গ থেকে এমন পাঁচটি দেহ নিমতলায় নিয়ে গিয়ে সৎকার করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, তাদের হেফাজতে এখনও এমন প্রায় দেড়শো দাবিদারহীন দেহ রয়েছে।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম শুক্রবার বলেন, ‘‘এখন থেকে মাঝেমধ্যেই নিমতলায় এ ভাবে অজ্ঞাতপরিচয় দেহ সৎকার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হিন্দু সৎকার সমিতিকে।’’
এর আগে পুরসভা বা পুলিশের গাড়িতে করে এই মরদেহগুলি ধাপায় নিয়ে যাওয়া হত সৎকারের জন্য। ফিরহাদ জানিয়েছেন, ধাপায় এখন যেহেতু করোনায় মৃতদের দেহ সৎকার হচ্ছে তাই আপাতত নিমতলা শ্মশানের পুরনো দু’টি চুল্লিতে এই দাবিদারহীন দেহগুলি সৎকার করা হবে বলে ঠিক হয়েছে।
হাসপাতালে এই মানুষগুলির মৃত্যুর পরে সেখানকার মর্গে তাঁদের দেহ সাত দিন রেখে দেওয়া হয়। দেখা হয়, তার মধ্যে কেউ এসে ওই দেহ দাবি করছেন কি না। তার পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে তা সৎকার করা হয়। আগের ব্যবস্থা অনুযায়ী, একসঙ্গে দশ-বারোটি মরদেহ নিয়ে যাওয়া হত। ফলে, কোনও কোনও দেহ বহু দিন পর্যন্ত মর্গে পড়ে থাকত। পুলিশ বা পুরসভার গাড়িতে একসঙ্গে একাধিক দেহ তুলে নিয়ে যাওয়া হত ধাপায়। সকলের চোখের আড়ালে দেহগুলি সৎকার করা হত।
কিন্তু সম্প্রতি ধাপায় করোনায় মৃতদের দেহ সৎকার শুরু হওয়ার পরে দাবিদারহীন দেহগুলি অন্য শ্মশানে সৎকারের সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। তার পরেই গড়িয়ার ওই ঘটনা। এর পরপরই বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, দাবিদারহীন দেহগুলি এ বার থেকে ভাল করে কাপড়ে মুড়ে কাচে ঢাকা গাড়িতে করে নিয়ে গিয়ে সৎকার করা হবে।