ব্লকের ফাঁকা জমিতে পরপর বেশ কয়েকটি প্লাস্টিকের ছাউনি দেওয়া বাঁশের ঘর। ঘরের মধ্যে ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের পাত্র। তাতে জমে আছে জল। রীতিমতো অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। শনিবার সেই সমস্ত ঝুপড়িতেই মিলল মশার আঁতুড়ঘর। পাওয়া গেল বিপুল পরিমাণ লার্ভা।
শনিবার এলাকার বাসিন্দারাই পুরকর্মীদের দেখিয়ে দিলেন ওই সমস্ত ঝুপড়ি। সল্টলেকের এফ ই ব্লকের ঘটনা। ১৫ দিনের মধ্যে ওই ঝুপড়িবাসীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিধাননগর পুরসভা। বাসিন্দাদের অনুরোধ মেনে ওই ব্লকে ফিভার ক্লিনিকও করা হবে বলে জানায় পুরসভা। উল্লেখ্য, এই ব্লকেই চলতি সপ্তাহে সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মৌসুমী মিশ্র নামে এক গৃহবধূর।
স্থানীয় ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নীলাঞ্জনা মান্নার দাবি, ওই বস্তির চারপাশে নিয়মিত ব্লিচিং ছড়ানো হয় এবং মশার তেল স্প্রে করা হয়। তবে বস্তির ভিতরে যে মশা নিধনের কাজ হয়নি, সে কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি।
প্রশ্ন উঠেছে, ঝুপড়ি গজিয়ে ওঠার পরেও মশা নিধনের কাজ হয়নি কেন? এলাকাবাসীর অভিযোগ, তাঁরা বারবার ব্লকের আবাসিক সমিতির তরফে চেষ্টা করলেও ওই ঝুপড়িবাসীদের সরানো সম্ভব হয়নি। অথচ, সম্প্রতি কেষ্টপুর খালের পাশের সরকারি জমি থেকে ঝুপড়ি সরিয়ে দিয়েছে পুরসভা।
বরো চেয়ারম্যান অনিতা মণ্ডল জানান, ঝুপড়িবাসীদের সরে যাওয়ার জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের প্রশ্ন, ঝুপড়ি সরানো হবে কি না, তার চেয়েও বড় প্রশ্ন, বস্তির ভিতরে কেন মশা নিধনের কাজ হল না?
এফ ই ব্লক অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বাসব বসাক জানান, পুরকর্তাদের ওই বস্তির পরিবেশ নিয়ে জানানো হয়েছে। তাঁরা পদক্ষেপ করেছেন। পাশাপাশি, আরও এক দিন ফিভার ক্লিনিক করার আবেদন জানানো হয়েছিল। পুরসভা তা মেনে নিয়েছে।
এ দিন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বরো চেয়ারম্যান, স্থানীয় কাউন্সিলর ও আধিকারিককে নিয়ে ওই ব্লক পরিদর্শন করেন। মৌসুমী মিশ্রের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেন তাঁরা।
বস্তির ভিতরে মশা নিধনের কাজ যে হয়নি, সেই অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়ে মেয়র পারিষদ বলেন, ‘‘রীতিমতো অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। বিপুল পরিমাণ লার্ভা মিলেছে। কেন এত দিন পদক্ষেপ করা হয়নি, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’ তবে তিনি জানান, বাসিন্দাদের আতঙ্ক কাটাতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তাঁদের প্রয়োজনীয় পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।