—প্রতীকী চিত্র।
বেআইনি ভাবে নির্মিত বহুতল ভেঙে গার্ডেনরিচে সম্প্রতি প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। বিনা বাধায় ওই বহুতল কী ভাবে তৈরি হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ব্যাপারে অভিযোগের আঙুল উঠেছে পুলিশ এবং পুরসভার দিকে। ঘটনার দায় কাদের, তা নিয়ে চাপান-উতোরের মধ্যেই শহরের বুকে বেআইনি নির্মাণ রুখতে ১৫ দিন অন্তর পুরসভা এবং কলকাতা পুলিশ সমন্বয় বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কলকাতা পুলিশের ১০টি ডিভিশনের উপ-নগরপালদের ওই সমন্বয় বৈঠক করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে প্রতিটি থানার ওসি এবং পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের।
লালবাজার সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে প্রতিটি ডিভিশনে এই সমন্বয় বৈঠক করা হয়েছে। তাতে কী ভাবে বেআইনি বাড়ি তৈরি আটকানো যায় এবং কোথায় কোথায় সেগুলি তৈরি হচ্ছে, সেই সমস্ত তথ্য নিয়েও আলোচনা হয়েছে। জুন মাস পর্যন্ত এই বৈঠকের সূচিও ঠিক করে ফেলা হয়েছে। ইতিমধ্যে হয়ে যাওয়া বৈঠকের আলোচনায় কী কী উঠে এসেছে, তা লালবাজারকে জানাতে বলা হয়েছে উপ-নগরপালদের।
পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বেআইনি বহুতল ঠেকাতে পুলিশ এবং পুরসভা যৌথ ভাবে কাজ করবে, এমনটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর জন্য দু’পক্ষই
বেআইনি বহুতল নিয়ে নিজেদের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করতে শুরু করেছে। আগামী ১২ এপ্রিল ফের ১০টি ডিভিশনের উপ-নগরপাল, থানার ওসি এবং সংশ্লিষ্ট বরোর পুরকর্তা ও আধিকারিকেরা বৈঠকে বসবেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, বর্তমানে পুলিশ বেআইনি বহুতলের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে পুরসভার আইনে। তার পরে পুলিশ পুরসভার কাছে সেই বহুতল সম্পর্কে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়। যদিও অভিযোগ, পুরসভার তরফে বেশির ভাগ সময়েই পুলিশকে সেই রিপোর্ট পাঠানো হয় না। এর ফলে পুলিশও চুপ করে যায়। এ বার থেকে যাতে নিয়ম মেনে উভয় পক্ষই বেআইনি বহুতলের বিরুদ্ধে যৌথ ভাবে কাজ করে, সমন্বয় বৈঠকে তার উপরে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হয়েছে। কোথাও বেআইনি নির্মাণের খবর পেলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে অথবা সেই নির্মাণ কী ভাবে ভাঙা হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে সমন্বয় বৈঠকে।
প্রসঙ্গত, গার্ডেনরিচে বেআইনি বহুতল বিপর্যয়ের পরে পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তার পরেই শহরে বেআইনি নির্মাণ রুখতে নোডাল অফিসার নিয়োগ করে লালবাজার। কলকাতা পুলিশের এক যুগ্ম-নগরপালকে নোডাল অফিসার হিসাবে নিয়োগ করা হয়। বেআইনি নির্মাণ আটকাতে পুরসভার সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করবেন তিনি।