প্রতীকী ছবি।
অপহৃত হওয়া সোনারপুরের এক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করল পুলিশ। শনিবার বরাহনগর থানার ডানলপ থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সোনারপুর থানা এলাকার বাসিন্দা অভিষেক মুখোপাধ্যায় নামে ওই ব্যবসায়ীর মা মনীষা মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামা হয়। গ্রেফতার করা হয়েছে প্রিয়াংশু পোল্লে ও জগন্নাথ গুপ্ত নামে দুই ব্যক্তিকে। অন্য অভিযুক্তেরা পলাতক।
তদন্তকারীরা জানান, জমি-বাড়ির ব্যবসা করতেন অভিষেক। গত বৃহস্পতিবার তাঁর পরিচিত পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে শহরের একটি হোটেলে যান তিনি। পার্থের উপস্থিতিতে সেখানেই প্রিয়াংশু, জগন্নাথ, পুরুষোত্তম ভার্মা, অভিষেক বল্লভ ও বিশ্বজিৎ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন ব্যবসায়ী। বৈঠকে কোনও বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কি শুরু হলে হোটেল থেকে তাঁদের বেরিয়ে যেতে অনুরোধ করা হয়। স্থির হয় সংবাদপত্রের মালিক পরিচয় দেওয়া অভিষেক বল্লভের অফিসে বসেই বৈঠক হবে। সেই মতো প্রেস লেখা গাড়িতে তোলা হয় ব্যবসায়ীকে। গাড়িতেই তাঁর চোখ-হাত বেঁধে ডানকুনিতে নিয়ে যাওয়া হয়। তদন্তকারীরা জেনেছেন, এক আইনজীবীর উপস্থিতিতে অপহৃতকে দিয়ে এগ্রিমেন্ট পেপারে লিখিয়ে নেওয়া হয়, ‘তাঁর থেকে অভিষেক বল্লভের ৭০ লক্ষ টাকা পাওনা আছে’। পরদিন ওই ব্যবসায়ীকে গাড়িতে ডায়মন্ড হারবার নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে অভিষেকের মাকে ফোন করা হয়। বলা হয়, ‘‘অভিষেকের থেকে পাওনা ৭০ লক্ষ টাকা শোধের তিন মাসের সময় পেরিয়েছে। সে কারণেই তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে। টাকা না পেলে সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে।’’ এর পরেই ফের জায়গা বদলান অপহরণকারীরা। অভিষেককে নিয়ে তাঁরা বরাহনগরের ডানলপে রওনা দেন।
শুক্রবারই সোনারপুর থানায় ছেলের অপহরণের লিখিত অভিযোগ করেন মনীষাদেবী। অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে পুলিশ। অপহরণকারীদের মোবাইলের অবস্থান যাচাই করে বরাহনগর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশের বিশেষ দল। পুলিশের কথা মতো মনীষাদেবী অপহরণকারীদের আপাতত ১০ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা জানান। স্থির হয়, ডানলপের একটি শপিং মলের সামনে ওই টাকা নিয়ে তিনি থাকবেন। সেখানেই হাতেনাতে দুই অপহরণকারীকে ধরে পুলিশ।
বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, ‘‘অপহরণের খবর পেয়ে সোনারপুর থানার পুলিশ বিশেষ দল গঠন করে বরানগর থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সেই মতো অভিযান চালিয়ে উদ্ধার হয়েছেন ব্যবসায়ী।’’