অসুস্থ হয়ে বাড়িতে সৌম্যজিৎ। পাশে বাবা-মা। —নিজস্ব চিত্র
ছুটির ঘণ্টা পড়তে আর কয়েক মিনিট বাকি। কিন্তু তার আগেই স্কুলের বইপত্র ব্যাগে ঢুকিয়ে নিয়েছিল। এই সামান্য ‘অপরাধ’-এই দিদিমণির কাছে বেধড়ক মার খেতে হল খুদে পড়ুয়াকে। শিক্ষিকার মারে সৌম্যজিৎ রায় নামে দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রের গালে রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছে। আতঙ্কে আর স্কুলে যেতে চাইছে না সে। সোমবার সকালে সল্টলেকের হরিয়ানা বিদ্যামন্দিরের এই ঘটনায় অভিযুক্ত ‘শর্মিষ্ঠা মিস’-এর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে সৌম্যজিতের পরিবার। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্কুল ও অভিভাবকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার শেষ পিরিয়ডের ক্লাস শেষ হওয়ার মুখে। সেই সময় সৌম্যজিৎ ব্যাগে বইপত্র ঢোকাতে শুরু করে। শেষ যখন হয়, তখনও ছুটির ঘণ্টা পড়েনি। তার মধ্যেই পিঠে স্কুল ব্যাগ নিয়ে নেয় সে।
এতেই রেগে অগ্নিমূর্তি ধারণ করেন ক্লাস টিচার। সৌম্যজিতের কাছে গিয়ে শুরু হয় মার। গালে, পিঠে চলতে থাকে চড়-থাপ্পড়। আচমকা এই আক্রমণে প্রচণ্ড ভয় পেয়ে যায় সৌম্যজিৎ। কিছুটা অসুস্থও হয়ে পড়ে। গালে কালসিটে পড়ে যায়।
এভাবেই গালে কালসিটে পড়ে গিয়েছে সৌম্যজিতের। —নিজস্ব চিত্র
আরও পড়ুন: ছাত্র-ছাত্রী টানাটানি, ঘর নিয়ে ফের জট
ওই অবস্থাতেই পুল কারে বাড়ি ফেরে সে। পুল কারের চালকই সৌম্যজিতের মাকে বিষয়টি জানান। এরপরই স্কুলে গোটা বিষয় জানান তার বাবা-মা। পাশাপাশি ছেলেকে নিয়ে যান আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ছেড়ে দেন চিকিৎসকরা। তবে তাঁরা জানান, গালে রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘বিপজ্জনক বাজার’ ভেঙে মৃত্যু দু’জনের
সৌম্যজিৎ এদিন জানায়, ‘‘স্কুল ছুটির একটু আগে পিঠে ব্যাগ নিতেই শর্মিষ্ঠা মিস আমাকে মারতে শুরু করে। আমার এক বন্ধুকেও মেরেছে। স্কুল যেতে খুব ভয় করছে।’’ তারা বাবা শুভজিৎ রায় জানান, থানায় অভিযোগের পাশাপাশি স্কুলেও ই-মেলে অভিযোগ জানানো হয়েছে। সৌম্যজিতের মা বলেন, ‘‘একটা ছোট্ট ছেলেকে এভাবে কেউ মারতে পারে ভাবতেই পারছি না। কী করে আর ছেলেকে ওই স্কুলে পাঠাব? ওই শিক্ষিকার কঠোর শাস্তি চাই।’’ তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি।