শুক্রবার রাতে সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি জুনিয়র চিকিৎসকেরা। — নিজস্ব চিত্র।
গত ১৪ অগস্ট, ঠিক এক মাস আগে আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার প্রতিবাদে অভিনব ‘রাত দখলের’ সাক্ষী ছিল কলকাতা। মহিলারা রাস্তায় নেমেছিলেন। সে দিন রাতে ভিড়ের মধ্যে আরজি কর হাসপাতালে হামলার ঘটনা ঘটে। একদল দুষ্কৃতী হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসকদের ধর্নামঞ্চ ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ। এক মাস পর আবার রাত দখলের ডাক দিলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। ১৪ সেপ্টেম্বর, শনিবার রাতে সাধারণ মানুষকে বিচারের দাবিতে পথে নামার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। সল্টলেকের ধর্নামঞ্চ থেকেই এই ডাক দেওয়া হয়েছে।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নায় বসেছেন হাজার হাজার জুনিয়র চিকিৎসক। শনিবার তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি পঞ্চম দিনে পা দিয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে বৃষ্টি চলছে। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই ধর্না চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বাঁশ দিয়ে ত্রিপল খাটিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরি করা হয়েছে। সেখান থেকেই শুক্রবার রাতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
আরজি করের এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং কিছু মিডিয়া চ্যানেল আমাদের আন্দোলনের মুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমাদের এই আন্দোলনের সঙ্গে প্রথম থেকেই রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। এক মাস আগে সাধারণ মানুষ আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বিচার চাইতে পথে নেমেছিলেন। সেই ভিড়ের সুযোগ নিয়ে আরজি করে হামলা চালানো হয়েছিল। এক মাস পর আবার সেই ঘটনাকে মনে রেখে আমরা রাত দখলের ডাক দিচ্ছি। আমাদের আহ্বান ‘রিক্লেম দ্য নাইট, রিক্লেম দ্য ফাইট এবং রিক্লেম দ্য রাইটের’ জন্য। প্রতিবাদে আবার কলকাতা শহরের রাস্তা আপনারা মুখর করে তুলুন, এটাই আমাদের আবেদন।’’
ওই আন্দোলনকারী ডাক্তার আরও বলেন, ‘‘আমরা পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করছি। এখনও বিশ্বাস করি, আলোচনার মাধ্যমেই এর সমাধান হবে। বৃহস্পতিবার আমরা নবান্নে গিয়েছিলাম। তিন ঘণ্টা বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমরা স্বচ্ছ ভাবে সকলের সামনে বৈঠক চেয়েছিলাম। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তাতে রাজি হননি। আবার আমরা ধর্নামঞ্চে ফিরে এসেছি তাই। আমাদের পাঁচ দফা দাবি সাধারণ মানুষের দাবি হয়ে উঠুক। আমরা এই আন্দোলনকে এতটাই জোরদার করে তুলব, যাতে সরকার আমাদের সঙ্গে সরাসরি সম্প্রচারে আলোচনায় বসতে বাধ্য হয়।’’
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, শুধু ডাক্তার নয়, হাসপাতালের নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী, রোগীর পরিবারের সুরক্ষার জন্য পথে নেমেছেন তাঁরা। পুলিশ কমিশনার কিংবা উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের পদত্যাগের দাবি হাসপাতালে ক্রিয়াশীল সিন্ডিকেটকে নির্মূল করার উদ্দেশ্যেই। যাতে ভবিষ্যতে ৯ অগস্টের মতো ঘটনা আর কোনও হাসপাতালে না ঘটতে পারে।