ফাইল ছবি
অসম্পূর্ণ ডিপো নিয়ে এবং উপযুক্ত সিগন্যালিং ব্যবস্থা ছাড়াই মহড়া দৌড়ের প্রস্তুতি শুরু হল জোকা-তারাতলা মেট্রোপথে। সূত্রের খবর, আগামী মাসের মাঝামাঝি প্রায় সাড়ে ছ’কিলোমিটার পথের ছ’টি স্টেশনের মধ্যে মহড়া দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। এর জন্য নোয়াপাড়া কারশেড থেকে অব্যবহৃত একটি নন এসি রেকের আটটি কামরা ট্রেলারে চাপিয়ে জোকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
মাসখানেকের মহড়ার শেষে জোকা থেকে তারাতলা পর্যন্ত চলতি বছরের অক্টোবরে পরিষেবা শুরু করতে চান কর্তৃপক্ষ। জোকা, ঠাকুরপুকুর, শখেরবাজার, বেহালা চৌরাস্তা, বেহালা বাজার এবং তারাতলা স্টেশন নির্মাণ আগেই সম্পূর্ণ হয়েছে। মাঝেরহাট মেট্রো স্টেশন তৈরি হচ্ছে। মোমিনপুর থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত মেট্রোপথ নির্মাণ এখনও শুরু হয়নি। এই মেট্রো পরিষেবা শুরুতে ‘ওয়ান ট্রেন সার্ভিস’ ব্যবস্থায় চলবে বলে জানিয়েছেন কর্তারা। কী এই ব্যবস্থা? একটি ট্রেন জোকা ছেড়ে বিভিন্ন স্টেশন হয়ে তারাতলা পৌঁছবে। আবার ফিরতি পথে ওই লাইন ধরে অথবা পাশের লাইন দিয়ে তারাতলায় ফিরে আসবে।
মেট্রোর কর্তাদের মতে, একটি ট্রেন নিয়ে মহড়া দৌড় শুরু হলে সিগন্যালিং ব্যবস্থার প্রয়োজন নেই। একাধিক ট্রেন লাইনে থাকলেই সিগন্যালিং ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়। মেট্রোর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নোয়াপাড়া থেকে দিনে দু’টি করে কামরা নিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছে। সব ক’টি পৌঁছলে সেগুলিকে জুড়ে রেক তৈরি করে মহড়া হবে।’’ তবে একটি ট্রেন দিয়ে পরিষেবা দিলে যাত্রী-চাহিদা কতটা মিটবে সেই সংশয় থাকছেই।
সূত্রের খবর, মেট্রোর পরিষেবায় ডিপোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, রেক রক্ষণাবেক্ষণে উপযুক্ত পরিকাঠামো ছাড়া পরিষেবা শুরু সম্ভব নয়। তা-ও জোকা মেট্রোর পরিষেবা তড়িঘড়ি শুরুর কারণ, দীর্ঘদিন ঢিমেতালে এই প্রকল্প চলায় রেল বোর্ডেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে নির্মাণকারী সংস্থা রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডকে।
জমি জটে ডিপোর নির্মাণ দীর্ঘ দিন থমকে ছিল। জোকা থেকে তারাতলার মধ্যে মেট্রোর উড়ালপথ নির্মাণ এক দশক ধরে চললেও ডিপো নির্মাণের জমি অধিগ্রহণ গতি পায় ২০১৭ সালের পর থেকে। তার পরেও বহু দিন একবারে জমি না মেলায় ডিপোর নির্মাণ শুরু হয়নি। পরে রাজ্য সরকারের তরফে জমিদাতাদের জন্য বিশেষ ভর্তুকির ব্যবস্থা করে জট ছাড়ানো হয়। চলতি বছরের শুরুতে জমির ৯৫ শতাংশের জট কাটায় পুরোদমে নির্মাণ শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় নন এসি রেকের ব্যবহার গত বছরের শুরু থেকেই সম্পূর্ণ বন্ধ। পড়ে থাকা সেই রেকই আপাতত মহড়া দৌড়ের জন্য নিয়ে আসা হচ্ছে। মেট্রো সূত্রের খবর, জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রোর ডিপো ও আধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা সম্পূর্ণ হতে আরও বছর দুয়েক লাগবে। রেক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কারশেড ছাড়াও ট্রেন মেরামত (পিট লাইন) এবং পরীক্ষার জন্য বিশেষ লাইন (ইনস্পেকশন বে)-সহ যাবতীয় পরিকাঠামো গড়তে সময় প্রয়োজন।