Jadavpur University Student Death

‘ঘেরাও হয়ে’ লালবাজারে গেলেন না ডিন! রেজিস্ট্রার বেরোলেন সাড়ে তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর

যাদবপুরকাণ্ডে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এবং ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়কে ডেকে পাঠানো হয়েছিল লালবাজারে। সেই মতো রেজিস্ট্রার হাজিরা দিলেও গেলেন না ডিন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২৩ ১৬:০৩
Share:

(বাঁ দিকে) রজত রায় এবং স্নেহমঞ্জু বসু।

যাদবপুরকাণ্ডে বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এবং ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়কে ডেকে পাঠানো হয়েছিল লালবাজারে। সেই মতো রেজিস্ট্রার বিকেলে হাজিরা দিলেও যাননি ডিন। পুলিশ সূত্রে খবর, পড়ুয়ারা ‘ঘেরাও’ করে রাখার কারণে তিনি লালবাজারে যেতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।

Advertisement

বুধবার গভীর রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচ থেকে নগ্ন ও অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে। বৃহস্পতিবার ভোরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’তে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ন’জন গ্রেফতার হয়েছেন। ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যে নানাবিধ প্রশ্নের মুখে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পুলিশ সূত্রে খবর, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার তদন্তে বুধবার বিকেল ৩টে নাগাদ রেজিস্ট্রার এবং ডিনকে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু সময় মতো তদন্তকারীদের মুখোমুখি হননি ডিন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যাদবপুর থানায় এক জন এসে জানান, ডিনকে পড়ুয়াদের একাংশ ‘ঘেরাও’ করে রেখেছেন বলেই তাঁর পক্ষে হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয়।

পুলিশ সূত্রেই খবর, রেজিস্ট্রার এবং ডিনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি (জুটা)-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়কেও বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, বুধবার জুটার পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কথা ছিল। সমিতির বক্তব্য, মেন হস্টেলে প্রথম বর্ষের যে ১৮ জন ছাত্র ছিলেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ নিয়ে গিয়ে ১২ ঘণ্টা পর ছেড়েছে। এতে অনেকের মানসিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। এক জন অসুস্থও হয়ে পড়েছেন। সেই বিষয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা ছিল জুটার।

Advertisement

প্রসঙ্গত, পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়কে শো-কজ় করেছিল পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশন। বিশ্ব ইউজিসির র‌্যাগিং সংক্রান্ত নির্দেশাবলি অমান্য করার কারণ দর্শাতে বলা হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছে, সুপ্রিম কোর্ট র‌্যাগিং সংক্রান্ত যে নির্দেশ দেয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তা অমান্য করা হয়েছে। র‌্যাগিং নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর নির্দেশিকাও মানা হয়নি। এ নিয়ে রেজিস্ট্রারকে নোটিস পাঠিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও। পাশাপাশি রাজ্যের কাছেও রিপোর্ট তলব করেছে তারা।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাগিং-বিরোধী কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য সিভি আনন্দ বোস। গত শুক্রবার তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন অধ্যাপককে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে রাজ্যপাল জানান, শুধু যাদবপুর নয়, রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটি ‘র‌্যাগিং-বিরোধী কমিটি’ তৈরি করা হবে। ওই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য তথা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়। আবার বুধবার এই বিষয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যপাল বোস। বুধবার বিকেল ৫টায় রাজভবনে এই বৈঠক ডেকেছেন তিনি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে প্রতিনিধিদের ওই বৈঠকে আসতে বলা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement