পুজোয় চ্যালেঞ্জ বেহালার যানশাসন

মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পর থেকেই পুজোয় বেহালার যান চলাচল নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে নানা মহলে। এ দিন বৈঠকের ‘ফেসবুক লাইভ’ চলাকালীন এ নিয়ে মন্তব্য করেছেন আমজনতাও। পুলিশেরও অনেকে একই আশঙ্কায় ভুগছেন। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১৫
Share:

মাঝেরহাট সেতুর পাশে রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। শুক্রবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

এ বছর পুজোয় যানজট সামলানোই প্রধান চ্যালেঞ্জ পুলিশের। শুক্রবার কলামন্দিরে পুজো কমিটির সঙ্গে পুলিশ, পুরসভা, দমকল-সহ প্রশাসনের সমন্বয় বৈঠকে এ কথা জানালেন খোদ পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। বললেন, ‘‘ট্র্যাফিক নিয়ে একটা ব়ড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। পুজো কমিটির সহযোগিতা চাই।’’ মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পর থেকেই ক্রমাগত যানজটের কবলে প়ড়ছে মহানগরের একাংশ। সে কথা মাথায় রেখেই সিপি-র এই মন্তব্য বলে মনে করছেন পুলিশকর্তাদের অনেকে।

Advertisement

তবে বেহালা, ঠাকুরপুকুর, হরিদেবপুর এলাকার পুজো কমিটিগুলিকে আশ্বাসও দিয়েছেন সিপি। বলেছেন, যানজটের সমস্যা যাতে না হয়, দেখা হবে। শহরের বাকি এলাকায় আগের বছরের তুলনায় এ বার আরও উন্নত ট্র্যাফিক ব্যবস্থা গ়়ড়ে তোলার ব্যাপারেও আশাবাদী তিনি।

মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পর থেকেই পুজোয় বেহালার যান চলাচল নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে নানা মহলে। এ দিন বৈঠকের ‘ফেসবুক লাইভ’ চলাকালীন এ নিয়ে মন্তব্য করেছেন আমজনতাও। পুলিশেরও অনেকে একই আশঙ্কায় ভুগছেন।

Advertisement

বস্তুত, মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পরে সরু রাস্তা দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে বেহালা, নিউ আলিপুরের যানজট সামলাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু পুজো এগিয়ে আসতে সেই সরু রাস্তাই মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে। লালবাজারের খবর, বেহালা, নিউ আলিপুর, চেতলার অলিগলিতে কয়েকটি পুজো হয়। তার মণ্ডপ তৈরির ফলে রাস্তায় চাপ প়ড়বে। একই ভাবে চাপ ফেলবে জেমস লং সরণির কয়েকটি পুজোও। তার আগে বিভিন্ন মোড়ে

বিশ্বকর্মার মণ্ডপেও রাস্তা আটকাতে পারে। তবে লালবাজারের এক কর্তার দাবি, ‘‘সমস্যা হলে সমাধানও বার করা হবে।’’

চেতলা রোডে চেতলা বয়েজ স্কুলের সামনে রাস্তার একাংশে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। পুলিশের দাবি, ওই মণ্ডপের ফলে শুক্রবার গাড়ি চলাচলে তেমন বাধা না পেলেও আগামী দিনে বাধা আসতেই পারে। জেমস লং সরণির একটি পুজো কমিটি ফুটপাতে মণ্ডপ করছে। ফলে সেখানে ভি়ড় রাস্তায় নামছে। পুলিশের বক্তব্য, ওই পুজোটি ফুটপাতেই হয়। তাই নতুন করে কিছু বলার নেই। তবে এই পরিস্থিতিতে রাস্তা বেশি আটকাতে নিষেধ করা হচ্ছে। এ দিন অবশ্য তুলনায় যানজট কম ছিল। তবে সকালে দু’টি গাড়ি অল্প সময়ের ব্যবধানে নিউ আলিপুরে খারাপ হয়ে যাওয়ায় যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে নিত্যযাত্রীদের।

এ দিন বৈঠকে বোঝা গিয়েছে, যানজট নিয়ে চিন্তায় রয়েছে বেহালা, ঠাকুরপুকুর ও হরিদেবপুরের পুজো কমিটিগুলিও। হরিদেবপুর ৪১ পল্লির পুজোকর্তা দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায় জানান, যানজটের কথা ভেবে তারা রাস্তায় ‘এল’ আকারের বিজ্ঞাপনী গেট করবেন না। পুজোয় বেহালা-হরিদেবপুরে ট্রাক নিয়ন্ত্রণের কথাও বলেছেন অনেকে। যানজটের প্রসঙ্গ তুলেছেন গার্ডেনরিচের দেশবন্ধু পাঠাগারের পুজোকর্তাও। তবে অনেকের অভিযোগ, পুজোর সময় পুজো কমিটিই বেশি রাস্তা আটকায়। এক যুবক কলকাতা পুলিশের ফেসবুকে আর্জি জানিয়েছেন, সেতু ভাঙার পরে কেউ কি পুজো কমিটিগুলিকে রাস্তা ফাঁকা রাখতে বলবেন?

শুধু যানজট নয়, বৈঠকে এ দিন উঠে এসেছে আরও কিছু প্রসঙ্গও। সিপি নিজে পুজো কমিটিগুলিকে অনুরোধ করেছেন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখতে। বেপরোয়া মোটরবাইকের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হওয়ার আর্জি জানিয়েছেন কেউ কেউ। কালীঘাটের একটি মহিলা পরিচালিত পুজো কমিটির আর্জি, অলিগলিতে আরও বেশি আলো দেওয়া হোক। কারও আর্জি, ভাঙাচোরা রাস্তা মেরামতির। চেতলা অগ্রণীর দাবি, আরও বেশি মহিলা পুলিশ দেওয়া হোক। কারও আর্জি, সুলভ শৌচালয় বৃদ্ধি এবং বায়ো-টয়লেট সাফ করার।

ফি-বছর পুজোয় শর্ট সার্কিট থেকে একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ দিন সে ব্যাপারে পুজো কমিটিগুলিকে সতর্ক করেছেন দমকলকর্তা তরুণ সিংহ। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তা সুব্রত ঘোষ পুজো কমিটিগুলিকে জানান, কলকাতা হাইকোর্ট, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশিকা মেনেই পুজো করতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement