অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।
এটিএম নয়, এবার চাকরির আবেদন করতে গিয়ে স্কিমারদের পাল্লায় পড়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খোয়ালেন সল্টলেকের এক তরুণী।
অন্য সবার মতোই সল্টলেকের এ-ই ব্লকের বাসিন্দা কণিকা ঘোষ চাকরির খবরাখবরের কয়েকটি সাইটে নিজের জীবনপঞ্জি আপলোড করেছিলেন।
তিনি বিধাননগরের সাইবার অপরাধ থানায় জানানো অভিযোগে লিখেছেন, ২৩ ডিসেম্বর এক জন মহিলা তাঁকে ফোন করেন। ওই মহিলা নিজেকে একটি নিয়োগ সংস্থার প্রতিনিধি হিসাবে পরিচয় দেন। কণিকা তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, ওই মহিলা তাঁকে বলেন, তাঁরা কনিকার জীবনপঞ্জি দেখেছেন। কলকাতার একটি নামী তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা কর্মী নিয়োগ করছে, এবং তাঁদের চাহিদার সঙ্গে কনিকার জীবনপঞ্জি মিল রয়েছে।
আরও পড়ুন: টালায় মদের আসরে থেঁতলে খুন যুবক, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই খুন ইঙ্গিত তদন্তে
ওই তরুনী তাঁর অভিযোগ পত্রে জানিয়েছেন, নিয়োগ সংস্থার প্রতিনিধি তাঁকে ডাব্লু ডাব্লু ডাব্লু ডট ক্যারিয়ারওয়ে ডট ইন নামে একটি সাইটের ঠিকানা দেন। তাঁকে বলে হয়, এই সাইটে গিয়ে অনলাইনে কনিকাকে চাকরির আবেদন পত্র পূরণ করে জমা দিতে হবে। তার জন্য অনলাইনেই ৪৯ টাকা জমা দিতে বলা হয় তাঁকে। কনিকাকে বলা হয়, অনলাইনে ফরম জমা দেওয়ার পর ২৪ ডিসেম্বর রাত ১০ টা থেকে ১২ টার মধ্যে তাঁর টেলিফোনে প্রাথমিক ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা করা হবে।
সেই অনুযায়ী কনিকা সোমবার ওই সাইটটি খুলে নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করার সঙ্গে সঙ্গে ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে ৪৯ টাকা জমা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কনিকা তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, পেমেন্ট অপশনে গিয়ে কার্ড ডিটেল দেওয়ার পর একটি ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ওটিপি আসে। সেই ওটিপি দেওয়ার পরও পেমেন্ট হচ্ছিল না। পর পর ওটিপি আসছিল। তিনি সেগুলো নির্দিষ্ট জায়গায় পূরণ করার পর গোটা পেমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়ায় কনিকার সন্দেহ হয়। তিনি নিজের ব্যাঙ্কের মিনি স্টেটমেন্ট পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখেন ছ’টি ট্রানজাকশনে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে বেরিয়ে গিয়েছে ৪৯ হাজার ৯৯৮ টাকা। তিনি সোমবারই পুলিশে অভিযোগ জানান।
আরও পড়ুন: ছ’দিন পরে গঙ্গা থেকে দেহ মিলল যুগলের
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, স্কিমিং এবং ফিসিং দুটি পদ্ধতিই ব্যববার করা হয়েছে এ ক্ষেত্রে। ফিসিং অর্থাৎ আসলের মত দেখতে ভুয়ো পেমেন্ট গেটওয়ে তৈরি করেছে জালিয়াতরা। তার সঙ্গে স্কিমারদের কায়দায় জেনে নিয়েছে কনিকার কার্ডের সমস্ত তথ্য। সেই তথ্য ব্যবহার করেই টাকা পাচার হয়ে গিয়েছে। বিধাননগর পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, সাইবার জালিয়াতরা প্রতি দিন নতুন নতুন কায়দায় হাজির হচ্ছে প্রতারণা করতে। এই কায়দাটি এক দমই নতুন। তদন্তকারীরা ওই ওয়েবসাইটের উৎস জানার চেষ্টা করছেন।
(কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনার বাছাই করাবাংলা খবরপড়তে চোখ রাখুন আমাদেরকলকাতাবিভাগে।