ঘুম থেকে উঠতেই বহুজাতিক সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মী মধুছন্দা সেনকে একরাশ ক্লান্তি ঘিরে ধরে। কোনও রকমে নাকে-মুখে অল্প কিছু গুঁজেই শুরু হয় দৌড়নো। দুপুরেও খাওয়া হয়ে ওঠে না বহু দিন। রাতে ঘুম আসে না তাঁর। খাওয়া-দাওয়া খুব হিসেব করে করলেও ওজন বেড়েই যাচ্ছে।
সল্টলেকের নিবেদিতা রায় আবার কিছুটা হাঁটলেই হাঁফিয়ে যাচ্ছিলেন। ওজনের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে হাঁটুর সমস্যাও। তাই হাঁটা-চলা কমিয়েছেন। দু’জনেই চিকিৎসকের কাছে গেলে জানতে পারেন, মধুছন্দার স্থূলতার সমস্যা আছে। নিবেদিতাদেবী ভুগছেন ‘ওবেসিটি’তে।
এক বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষা বলছে, মহিলাদের স্থূলতার নিরিখে ভারত বিশ্বে তৃতীয়। প্রথম দুই স্থানে আমেরিকা ও চিন। ভারতে শহরে থাকা মহিলাদের ২৩ শতাংশ স্থূলতায় ভুগছেন। বাদ যাচ্ছেন না কলকাতার মহিলারাও। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, স্থূলতা ডায়াবিটিস, হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপও ডেকে আনে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজের জন্য সময় রাখা জরুরি। অসময়ে খাওয়া, প্রাতরাশ না করা, কম ঘুমনো ও মানসিক চাপ স্থূলতা বাড়াচ্ছে। নিয়মিত শারীরচর্চার সঙ্গে নিজের পছন্দের কাজের জন্যও সময় রাখা দরকার। ওজন বাড়তে শুরু করলেই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। ব্যায়াম, অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার না খেলে ওবেসিটি এড়ানো যাবে।
স্থূলতার শল্য চিকিৎসক বি রমন বলেন, ‘‘অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, মানসিক চাপ স্থূলতার ঝুঁকি বা়ড়ায়।’’ এ ছাড়া ঋতুস্রাব বন্ধের পরে মহিলাদের দেহে বিভিন্ন হরমোনে বদল আসে। তাই মহিলাদের স্থূলতার সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট ঈশানী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সুস্থ থাকার জন্য ভারী প্রাতরাশ জরুরি। তার পরে সারা দিন দু’-তিন ঘণ্টা অন্তর খাওয়া দরকার।’’