ছবি: সংগৃহীত
রবীন্দ্র সরোবরে দূষণ প্রতিরোধে ছটপুজো বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। এর জন্য বিকল্প হিসেবে যে ১১টি জলাশয় ছটপুজোর জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে, সেখানে দূষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েও প্রশ্ন তুললেন পরিবেশকর্মীদের একটি বড় অংশ। তাঁদের দাবি, যে কারণে রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজো বন্ধ করার কথা ভাবা হয়েছে, সেই একই কারণে অন্য জলাশয়েও দূষণ ছড়াতে পারে। বিকল্প জলাশয়গুলিতেও যাতে দূষণ না ছড়ায়, তার জন্য জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে।
পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘রবীন্দ্র সরোবরে দূষণ বন্ধ করার অর্থ এই নয় যে অন্য জলাশয়ে ফুল বা পুজোর বিভিন্ন উপচার ফেলে সেগুলিকে দূষিত করা যাবে। সেখানেও দূষণ আটকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এর জন্য আদালতকে জানাব।’’
কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, ওই সব জলাশয়ে দূষণ যাতে আটকানো যায়, সেই কারণে সমস্ত রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই করা হয়ে গিয়েছে। পুরসভা কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে সহযোগিতা করছেন। ছটপুজোয় ব্যবহৃত ফুল ফেলে না দিয়ে যাতে সার তৈরি করা যায়, তার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুর কর্তৃপক্ষের দাবি।
কেএমডিএ এবং কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজোর উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। বিকল্প হিসেবে রবীন্দ্র সরোবরের আশপাশে কিছু জলাশয় চিহ্নিত করা হয়েছে যাতে পুণ্যার্থীদের যাতায়াতে সুবিধা হয়।
ওই জলাশয়গুলিতে অস্থায়ী ঘাট তৈরি করা ছাড়াও ফুল ও পুজোর উপচার রাখার আলাদা জায়গা তৈরি করা হবে।
তা ছাড়াও জলাশয়ের ঠিক পাশেই পুজো করার জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করে দিতে হবে। কেএমডিএ-র এক আধিকারিক জানান, প্রতিটি জলাশয়ে নজরদারি থাকবে। পুজোর পরেই জলাশয়ের ধার থেকে ফুল ও পুজোর অন্য সামগ্রী সরিয়ে ফেলা হবে। জলাশয়গুলিও পরিষ্কার করা হবে। তিনি জানান, পুরসভার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই কাজ করা হবে।
কলকাতা পুরসভার ১০ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘বিকল্প জলাশয়গুলির প্রায় সবক’টি আমার এলাকায়। আমি পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা বলেছি। জলাশয় পরিষ্কার রাখতে এবং দূষণ প্রতিরোধে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’
তিনি জানান, দুর্গাপুজোর পরে গল্ফ গ্রিন অঞ্চলের বিভিন্ন পুজোর মণ্ডপ থেকে ফুল সংগ্রহ করে একটি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছিল। সেই সংস্থা ওই ফুল থেকে সার তৈরি করেছে।
ছটপুজোর ক্ষেত্রেও ফুল এ ভাবেই পুনর্ব্যবহার করা হবে। ওই সংস্থার অন্যতম কর্ণধার ভাস্বতী বসু বলেন, ‘‘কলকাতা পুরসভা থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে পুজোয় ব্যবহৃত ফুল সংগ্রহের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। আমরা সেই ফুল থেকে প্রাকৃতিক নিয়মে সার তৈরি করে ফুলের চাষেই ব্যবহার করব।’’