প্রতীকী ছবি।
শহর থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে তাঁকে হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন সমাজকর্মী, সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত জিজা ঘোষ। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছিল কলকাতা বিমানবন্দরে। তার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থা গো এয়ার নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে নেয় জিজার কাছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, যাঁরা শারীরিক প্রতিবন্ধী অথবা জিজার মতো সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত, সেই সব যাত্রীদের পরিষেবা দেওয়া নিয়ে অভিযোগ উঠবে কেন? কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য সোমবার বলেন, ‘‘এমন যাত্রীদের পরিষেবা দেওয়ার বিষয়ে প্রতিটি উড়ান সংস্থার নিজস্ব নিয়ম (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর বা এসওপি) রয়েছে। সেগুলি মাস দেড়েক আগে এক বার তাদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আবার তা মনে করিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে। আমরা খুব তাড়াতাড়ি এ নিয়ে বৈঠক ডাকব।’’
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, দৃষ্টিহীনদের সুবিধার কথা ভেবে মেঝেতে বোতামের মতো পথ বানানো হয়েছে টার্মিনালে। একে ট্যাকটাইল্স বলে। হাতের লাঠি সেই বোতাম ছুঁলে বিমানে ওঠার পথ খুঁজে নিতে পারেন দৃষ্টিহীন যাত্রী। রয়েছে স্বয়ংক্রিয় হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা। শৌচাগার এবং লিফটে দৃষ্টিহীনদের সুবিধার জন্য ব্রেল বোতাম রয়েছে। প্রতিবন্ধীদের গাড়ি রাখার জন্য আছে আলাদা পার্কিং। হুইলচেয়ারে বসেই চেক-ইন কাউন্টারে গিয়ে যাতে কোনও প্রতিবন্ধী যাত্রী নিজের কাজ করতে পারেন, সে জন্য উচ্চতা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু কাউন্টারের।
বিমানে ওঠার সময়ে যে সব উড়ান সংস্থা র্যাম্প ব্যবহার করে, তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা হয় না। অন্যদের ক্ষেত্রে মালপত্র তোলার বিশেষ লিফটে করে হুইলচেয়ার সহ প্রতিবন্ধীদের বিমানে উঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বিমানবন্দরের কর্তাদের কথায়, ‘‘শুধু পরিকাঠামো থাকলেই হবে না। উড়ান সংস্থার কর্মীদেরও যথেষ্ট প্রশিক্ষণ ও সহমর্মিতা থাকা প্রয়োজন। সে দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠছে।’’ রবিবার জিজার সহযাত্রী রত্নাবলী রায় অভিযোগ করেছিলেন, সে দিন জিজাকে দেখে তিনি ‘ভয়’ পেয়ে যান বলে জানিয়েছিলেন গো এয়ারের এক মহিলা কর্মী। এখানেই প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে বলে মনে করছেন অধিকর্তা কৌশিকবাবু। বৈঠক মূলত তার জন্যই।