রাস্তার ধারে গাড়ি দাঁড় করানো।
একটি নয়, একাধিক। সে সময়ে মেকানিক্যাল সুইপার দিয়ে রাস্তার আবর্জনা সাফাইয়ের কাজ হচ্ছিল। কিন্তু, গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় মাঝপথেই সেই কাজ গেল থমকে। গাড়িগুলি কাদের জানা না যাওয়ায় আবর্জনা সরানোও গেল না। তা পড়ে রইল রাস্তাতেই।
সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে সল্টলেকের ফার্স্ট অ্যাভিনিউয়ে। তবে শুধু ওই রাস্তার ধারেই নয়, একাধিক রাস্তার ধার এবং ফুটপাত চলে গিয়েছে গাড়ির দখলে। এমনকি, ফাঁকা জমিতেও গাড়ি রাখা থাকে দীর্ঘ ক্ষণ।
দূষণের অন্য ছবিও দেখা যাচ্ছে সল্টলেকে। সেখানকার একটি বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গেল, পুরনো পদ্ধতিতে বাস পরিষ্কার করা হচ্ছে। তার জেরে বাসের ধুলো-ময়লা ছড়িয়ে পড়ছে চতুর্দিকে।
এই সমস্যার কথা স্বীকার করে মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবাশিস জানা বলেন, ‘‘গাড়ি যত্রতত্র রাখা কিংবা বাসস্ট্যান্ড সাবেক পদ্ধতিতে সাফাইয়ের জেরে দূষণের অভিযোগ এসেছে। এই বিষয়ে পর্যালোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে।’’
বাসিন্দাদের অভিযোগ, সল্টলেকে প্রশাসন অনুমোদিত একাধিক পার্কিং লট রয়েছে। তা সত্ত্বেও বহু রাস্তার ধারে দখলদারির এমন ছবি প্রায়ই চোখে পড়ে। শুধু
আবর্জনা সাফ করতে অসুবিধাই নয়, এ ভাবে যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখার জেরে ফুটপাত দিয়ে হাঁটাচলা করতে সমস্যা হচ্ছে বলেও বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ। এর পাশাপাশি রাস্তার পরিসর কমে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বেড়ে যাচ্ছে।
কিন্তু নির্ধারিত পার্কিং লট থাকার পরেও কেন রাস্তার উপরে যেখানে-সেখানে গাড়ি দাঁড় করানো থাকবে?
বাসিন্দাদেরই একাংশের অভিযোগ, পার্কিং লট থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। সল্টলেকে এখন ব্লকে ব্লকে বেসরকারি অফিস, দোকান, বাজার বেড়েছে। ফলে প্রতিদিন বাইরে থেকে অসংখ্য গাড়ি এসে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। পাশাপাশি সল্টলেকে অনেকেরই একাধিক গাড়ি রয়েছে। ফলে তাঁদের বাড়ির গ্যারাজে জায়গা হয় না। তাঁরাও ফুটপাত বা রাস্তার ধারে গাড়ি রাখছেন। অনেক ক্ষেত্রে আবার দেখা যাচ্ছে, গ্যারাজে থাকেন কেয়ারটেকার। গাড়ি থাকে বাড়ির চত্বরে কিংবা সামনের ফুটপাতে।
সম্প্রতি বিধাননগর উত্তর থানা এলাকায় একটি গাড়ি রাস্তার পাশে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। পুলিশকে দেখে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন চালক। তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ মাঝেমধ্যে এ নিয়ে পদক্ষেপ করলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা যথেষ্ট নয়।
বিধাননগর কমিশনারেটের ডিসি (সদর) অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘এ নিয়ে সমস্যা হলে বা অভিযোগ এলে প্রতি ক্ষেত্রেই পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। যান চলাচল বা নাগরিকদের হাঁটাচলা যাতে ব্যাহত না হয়, সে দিকে নজর থাকে। পাশাপাশি, বাসিন্দা এবং পুর প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে কী ভাবে পার্কিং ব্যবস্থা আরও উন্নত করা যায়, তা-ও দেখা হচ্ছে।’’