প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যে বিধিনিষেধের মেয়াদ ফুরোলে গণপরিবহণ সচল করা নিয়ে বড়সড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৯০ টাকা ছুঁতেই পরিষেবা সচল রাখা নিয়ে আশঙ্কার কথা শোনাচ্ছেন বাস-মিনিবাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তাঁদের একাধিক সংগঠনের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানানো হচ্ছে।
এর পাশাপাশি বাসমালিকদের সংগঠনগুলি ঠিক করেছে, আজ, বুধবার থেকে বিভিন্ন স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে পোস্টার সেঁটে পরিষেবা শুরু করার ক্ষেত্রে নিজেদের অক্ষমতার কথা জানাবে তারা। কেউ কেউ এক ধাপ এগিয়ে সরাসরি পরিষেবা বন্ধ রাখার কথাও বলছেন। ফলে, বিধিনিষেধ ওঠার পরে রাস্তায় বেসরকারি বাস ও মিনিবাস কতটা পাওয়া যাবে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। বাসমালিক সংগঠনগুলির বক্তব্য, গত বছর অতিমারির জেরে লকডাউনের সময়ে লিটার প্রতি ডিজেলের দাম ছিল ৬৪ টাকা। যাত্রী-সংখ্যা কমে যাওয়ার আশঙ্কায় সেই সময়ে বাসের ভাড়া বৃদ্ধির দাবি উঠেছিল। এক বছরের মধ্যে ভাড়া না বাড়লেও ডিজেলের দাম লিটারে ২৬ টাকা বেড়েছে। মাঝের কয়েক মাস বাদ দিলে প্রায় নামমাত্র যাত্রী নিয়ে চলেছে বাস। বাসের বিমা ছাড়াও টোল প্লাজার খরচ বেড়েছে লাফিয়ে। একাধিক বাসমালিক ব্যাঙ্কের কিস্তির টাকাও ঠিক মতো মেটাতে পারেননি বলে অভিযোগ।
এই অবস্থায় অগ্নিমূল্য ডিজেল কিনে বাস চালানো কোনও ভাবেই সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন ‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায়। জ্বালানির দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। সমস্যার কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিচ্ছে ‘বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’। এ ছাড়া, নিজেদের সংগঠনের আওতায় থাকা সব রুটের বাসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বার্তা দিয়ে ‘দিদি আমাদের বাঁচান’ লেখা পোস্টার সাঁটছে তারা। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগী না হলে পরিষেবা মুখ থুবড়ে পড়বে।’’ রাজ্যের পরিবহণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী দিলীপ মণ্ডলকে মঙ্গলবার চিঠি দিয়েছে ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘ডিজেলের বেপরোয়া মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ভাড়া না-বাড়লে পরিষেবা সচল রাখা অসম্ভব।’’
পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা অবশ্য পরিস্থিতি নজরে রাখলেও সরাসরি এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। সরকারি সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে তাঁরাও। তবে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির আঁচ সরকারি পরিবহণ নিগমের ভাঁড়ারেও পড়েছে। সেই কারণে রাস্তায় তাদের বাসের সংখ্যাও মাসখানেক আগেই কমতে দেখা গিয়েছে। সেই প্রবণতা বজায় থাকতে পারে মাসখানেক পরেও। সব মিলিয়ে বাসের আকালে দুর্ভোগ বাড়তে পারে যাত্রীদের।