Durga Puja 2024

দম ফেলা দায়, মহালয়ার আগে কেনাকাটার চেনা ছন্দে শহর

আর জি করে চিকিৎসক-ছাত্রীকে খুন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে লাগাতার আন্দোলনে এ বছর পুজোর রেশ শহরে শুরু হয়েছিল অনেকটাই দেরিতে। পুজোর এক মাস আগেও শহরের অধিকাংশ বাজারেই কার্যত মাছি তাড়াচ্ছিলেন দোকানিরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২৬
Share:

জনসমুদ্র: পুজোর কেনাকাটার ভিড় রবিবারের নিউ মার্কেটে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

বিকেল গড়াতে না গড়াতেই দোকানে দোকানে ভিড় বেড়ে জনপ্লাবনের চেহারা। কেনাকাটার ব্যাগ হাতে চলল আশপাশের মণ্ডপ দর্শনও। সব মিলিয়ে রবিবার, মহালয়ার আগে শেষ ছুটির দিনে চেনা ভিড়ের দেখা মিলল শহরের বাজারগুলিতে। ব্যতিক্রম হল না শহরের শপিং মলগুলিও।

Advertisement

আর জি করে চিকিৎসক-ছাত্রীকে খুন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে লাগাতার আন্দোলনে এ বছর পুজোর রেশ শহরে শুরু হয়েছিল অনেকটাই দেরিতে। পুজোর এক মাস আগেও শহরের অধিকাংশ বাজারেই কার্যত মাছি তাড়াচ্ছিলেন দোকানিরা। তবে হাওয়া ঘুরতে থাকে সপ্তাহ দুই আগে থেকে। মহালয়ার আগে শেষ ছুটির দিনে যা চলে গেল কার্যত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচের ‘মোডে’।

এ দিন দুপুর থেকে শহরের একাধিক বাজার ঘুরে সব থেকে বেশি ভিড় দেখা গেল নিউ মার্কেটে। ক্রেতাদের ভিড়ে দুপুরের পর থেকে বাজারে ঢোকা কার্যত দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়। হকার থেকে শুরু করে বিক্রেতাদের চিৎকারে পরিস্থিতি আরও সঙ্গিন হয়। জিনিস হাতে তুলে নিয়ে চিৎকার করছিলেন এক বিক্রেতা। খদ্দের সামলাতে সামলাতে বললেন, ‘‘ভিড় তো হচ্ছে এই দু’সপ্তাহ! মাসখানেক আগে থেকে শুরু হলে ভাল হত! এখন একটাই আশা। শেষ ভাল যার, সব ভাল তার।’’ সেই কথার রেশ ধরে পাশের দোকানি বললেন, ‘‘যা বিক্রি হওয়ার আজই হবে। কালকের জন্য জিনিস ফেলে রাখলে এ বছর জিনিস গুদামঘরেই রয়ে যাবে। রাত হলেও আজ বাজার ছাড়ছি না।’’ দুপুর পেরিয়ে রোদের তেজ যত কমেছে, ভিড় তত উপচে পড়েছে এই বাজারে।

Advertisement

দেরিতে শুরু হলেও পুজোর কেনাকাটার ভিড়ে এ দিন চেনা ছন্দে ছিল উত্তরের হাতিবাগান থেকে দক্ষিণের গড়িয়াহাট। দুপুরের পর থেকে গড়িয়াহাটের ফুটপাতে হাঁটাচলা করাই দায় হয়ে ওঠে। ফুটপাতে দাঁড়িয়ে কানের দুল পছন্দ করছিলেন দুই তরুণী। দরাদরির ফাঁকে তাঁদের এক জন বললেন, ‘‘ভিড়ের যা অবস্থা, ফুটপাতে উঠলে দমবন্ধ হয়ে আসছে। এখনও বেশ কিছু টুকিটাকি জিনিস কেনা বাকি রয়েছে। এই ভিড়ে কখন করব জানি না।’’ ফুটপাত ধরে কিছুটা এগোতেই ক্রেতা-বিক্রেতার বাগ্‌বিতণ্ডা চোখে পড়ল। চুড়িদারের পসরা সাজিয়ে বসা, উত্তেজিত ওই দোকানি গজগজ করলেন, ‘‘এখনই তো ব্যবসার সময়! আর এখন উনি জিনিস বদলাতে এসেছেন! কার এখন সময় আছে এ সব করার?’’

কেনাকাটার ফাঁকে অনেকেই আবার চট করে ঢুঁ মেরে নিলেন আশেপাশের পুজোমণ্ডপে। গড়িয়াহাট সংলগ্ন চক্রবেড়িয়ার পুজোমণ্ডপ ঘুরে দেখছিলেন কসবার বাসিন্দা মহুয়া পাত্র। সঙ্গের ছেলেকে দেখিয়ে বললেন, ‘‘বাজার করতে এসে ওর বায়নায় এখানে আসতে হল। এক দিক থেকে ভালই হয়েছে। পুজোর ক’দিন ভিড় ঠেলে আর এখানে আসতে হবে না।’’

পুজোর আগে উপচে পড়া ভিড়ের চেনা ছবি শহরের শপিং মলগুলিতেও। ভিড়ের চাপে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের একটি শপিং মলে দুপুরের পরেই বোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, গাড়ি রাখার জায়গা খালি নেই। শপিং মলগুলিতে দুপুরের তুলনায় বিকেল ও সন্ধ্যের দিকে সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল। ক্রেতা টানতে সেখানে ছিল নানা আয়োজন। প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের একটি শপিং মলের জেনারেল ম্যানেজার দীপ বিশ্বাস বললেন, ‘‘গত সপ্তাহে শপিং মলে আসা মানুষের সংখ্যা এক লক্ষ ছাড়িয়েছিল। এ দিন সন্ধ্যের মধ্যেই তা গত রবিবারের সংখ্যাকে ছাপিয়ে গিয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement