পঙ্কজ ঘোষ।
তাঁর কলেজ জীবন চুকে গিয়েছে প্রায় আট বছর। তবুও তিনিই উল্টোডাঙার স্যর গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) ইউনিট সভাপতি! নজরুল মঞ্চে ওই কলেজ আয়োজিত কেকে-র অনুষ্ঠানের ‘গেট পাসে’ও অধ্যক্ষের পাশে রয়েছে তাঁর নাম! যিনি ছাত্রই নন, তিনি ছাত্র ইউনিটের সভাপতি হন কী ভাবে? গেট পাসেই বা তাঁর নাম কেন?
সঙ্গীতশিল্পী কেকে-র মৃত্যুর পরে নজরুল মঞ্চে মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে গাফিলতির একাধিক অভিযোগ উঠেছে। স্যর গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের জন্য অনুষ্ঠান হলেও অভিযোগ উঠেছে টিকিট বিক্রির। প্রেক্ষাগৃহের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি শ্রোতাকে ঢোকানোয় দমবন্ধ পরিবেশ তৈরির অভিযোগও ওঠে। এ সব নিয়ে ওই কলেজ ইউনিয়নের ছেলেদের সঙ্গে শ্রোতাদের একাংশের হাতাহাতি হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। বুধবার এ নিয়ে খোঁজ করতেই সামনে আসে সংশ্লিষ্ট কলেজের টিএমসিপি ইউনিট সভাপতি পঙ্কজ ঘোষের প্রসঙ্গ।
জানা যায়, ২০১৪ সালে কলেজের পড়া শেষ হয়েছে পঙ্কজের। এক সময়ে তিনি কলেজের টিএমসিপি-র ইউনিট সভাপতি ছিলেন। অন্যান্য কলেজের মতো এখানেও ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ হওয়ায় নতুন ইউনিট গঠন বন্ধ। সেই থেকে কলেজে জড়িয়ে এলাকায় রাজনীতি শুরু পঙ্কজের। মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের প্রথম সারির নেতাদের ‘ঘরের ছেলে’ তিনি। সেই সূত্রেই তিনি অশিক্ষক কর্মীর চাকরিও পান বলে দাবি। অভিযোগ, ওই চাকরি নিয়েই বকলমে তিনি কলেজ নিয়ন্ত্রণ করেন।
পড়ুয়াদের একাংশ জানাচ্ছেন, পঙ্কজই ঠিক করেন কলেজের কোন টাকা কোন খাতে খরচ হবে। কিংবা কোন মেধা তালিকায় কত জনের নাম থাকবে। তাঁর স্নেহভাজন হলেই ক্লাস না করেও পরীক্ষায় বসতে সমস্যা হয় না। এক পড়ুয়া বলেন, ‘‘গত দু’বছর কলেজ বন্ধ থাকায় অনুষ্ঠান হয়নি। এ বছর তাই উৎকর্ষ অনুষ্ঠান ভাল ভাবে করার ঘোষণা করেন পঙ্কজদা। পড়ুয়াদের ভর্তির সময়ে যে ইউনিয়ন ফি জমা হয়, তা দিয়ে কিছু খরচ ওঠে। তবে ২৫ লক্ষ টাকার অনুষ্ঠানের বেশির ভাগই তাঁর জোগাড় করা।’’
পঙ্কজের বক্তব্য, ‘‘বাজেটের বিষয়টা কলেজের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। মন্তব্য করব না। এক সময়ে ইউনিট তৈরি হয়েছিল। পরে নতুন ইউনিট না হওয়ায় আমিই আছি।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘এত বড় শিল্পীর মৃত্যু হয়েছে, কাউকে দোষারোপ করার সময় এখন নয়।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।