ফাইল চিত্র।
পরিবেশ আদালতের চাপে শহর থেকে হটমিক্সের (রাস্তা তৈরির মূল উপাদান) প্লান্টই তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে পুর প্রশাসন। কলকাতা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে ওই কারখানা গড়ার প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে। শুক্রবার মেয়র পারিষদ বৈঠকে তেমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসে পরিবেশ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, কলকাতা শহরে হটমিক্স প্লান্ট রাখা যাবে না। কিন্তু শহর এলাকায় পুর প্রশাসনেরই দু’টি হটমিক্স প্লান্ট রয়েছে। একটি মধ্য কলকাতার পামারবাজারে এবং অন্যটি দক্ষিণ শহরতলির গড়াগাছায়। পুরসভা সূত্রের খবর, বিটুমিন, বালি এবং পাথরকুচির মিশ্রণ তৈরি করাই প্লান্টের মূল কাজ। আর কলকাতা শহরের প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি ও সারাইয়ের মূল উপাদান হটমিক্স। পরিবেশ আদালত রায়ে জানিয়ে দিয়েছে, ওই উপাদান থেকে যে দূষণ ছড়ায়, তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই অবিলম্বে তা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
পুরসভার রাস্তা দফতরের এক আধিকারিক জানান, প্রথম দিকে ভাবা হয়েছিল পরিবেশ আদালতের কাছে ফের আবেদন জানালে কাজ হবে। কিন্তু তা করেও লাভ হয়নি। অবস্থা এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, মিশ্রণ তৈরি বন্ধ থাকায় পুরসভার দু’টি প্লান্টই বালি, পাথরকুচি, বিটুমিনে ভরে গিয়েছে। অন্য দিকে, বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে রাস্তা তৈরি ও সারাইয়ের আবেদন জমা পড়ছে। সমস্যার দোফলায় পড়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে পুরকর্তারাও। এরই মধ্যে চলেছে মেয়র বদলের পর্ব। ফলে তা নিয়ে জটিলতা বেড়েই গিয়েছে।
পুরসভার এক অফিসার জানান, এই পরিস্থিতিতে কলকাতার বাইরে হটমিক্স কারখানার জন্য জায়গা খোঁজা শুরু করেন। গত ২৭ নভেম্বর দক্ষিণ কলকাতার ভাঙড় এবং শিরাকোলে দু’টি জায়গাও দেখেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। দু’টি জায়গাই রাজ্যের পূর্ত দফতরের অধীনে। ৩০ নভেম্বরে সিদ্ধান্ত হয়, হটমিক্স প্লান্ট গড়ার জন্য ওই দু’টি জায়গা পূর্ত দফতরের থেকে নেওয়া হবে। তার পরেই এ দিন মেয়র পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি ওঠে।
পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, কলকাতায় অবস্থিত দু’টি প্লান্টই বন্ধ করে দেওয়া হবে। সেখান থেকে
মালপত্র তুলে নিয়ে যাওয়া হবে নতুন জায়গায়। সিদ্ধান্ত হয়েছে, পামারবাজারের প্লান্ট যাবে ভাঙ্গড়ে আর গড়াগাছার প্লান্টটি বসানো হবে শিরাকোলে। মেয়র পারিষদ বৈঠকে তার অনুমোদনও মিলেছে। এ দিকে, মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘‘শহরে রাস্তা তৈরি এবং সারাইয়ের ক্ষেত্রে কেএমডিএ যেমন বাইরে থেকে মিশ্রণ এনে কাজ করে, কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন এলাকাতেও আপাতত সে ভাবেই কাজ হবে।’’