Kolkata Police

Road Safety Week: হর্নের শব্দ নয়, নীরবতার প্রচারে হাসপাতাল ও ট্র্যাফিক পুলিশ

ই এম বাইপাসের উপরে রয়েছে পর পর হাসপাতাল। তাই ওই এলাকায় হর্নের সমস্যায় জেরবার হতে হয় চিকিৎসা করাতে আসা অসংখ্য মানুষ, তাঁদের পরিজন এবং হাসপাতালের কর্মীদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৫৫
Share:

হর্ন দেওয়া নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে তিলজলা ট্র্যাফিক গার্ড ও একটি বেসরকারি হাসপাতালের যৌথ প্রচার। শুক্রবার, বাইপাসের ধারে। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালের সমানে হর্ন নয়। পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ উপলক্ষে শুক্রবার এই নিয়ে সচেতনতার প্রচার চালানো হল ই এম বাইপাসের আনন্দপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালের সামনে। এতে কলকাতা পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের প্রতিনিধিরা যৌথ অংশ নেন। তবে শুধু ওই এলাকাই নয়, শব্দ-যন্ত্রণায় জেরবার শহরের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, তা মানছেন চিকিৎসকেরাই।

Advertisement

অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া তিলজলা ট্র্যাফিক গার্ডের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, প্রতি বছর পথ নিরাপত্তা সপ্তাহে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়। কিন্তু হাসপাতালের সামনে হর্ন না বাজানোর বিষয়টি, আগে ততটা গুরুত্ব পায়নি। অথচ ই এম বাইপাসের উপরে রয়েছে পর পর হাসপাতাল। তাই ওই এলাকায় হর্নের সমস্যায় জেরবার হতে হয় চিকিৎসা করাতে আসা অসংখ্য মানুষ, তাঁদের পরিজন এবং হাসপাতালের কর্মীদের।

এ দিন সচেতনতার ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ‘অল ইন্ডিয়া হিউম্যান রাইটস’-এর উইমেন্স সেলের প্রেসিডেন্ট সুজাতা ভট্টাচার্য। এ প্রসঙ্গে দু’টি অভিজ্ঞতার কথা তিনি শোনান। একটি, তখন তিনি সদ্য সন্তানের জন্ম দিয়েছেন বারাসতের টাকি রোড সংলগ্ন একটি হাসপাতালে। তাঁর সদ্যোজাত সন্তান ট্রাকের তীব্র হর্নে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। টানা কয়েক দিনের চিকিৎসায় সুস্থ হয় সে। অন্য ঘটনাটি গত বছরের। করোনার সংক্রমণ তখন তুঙ্গে। বাইপাসের হাসপাতালগুলির পাশ দিয়ে ফাঁকা রাস্তা ধরে অ্যাম্বুল্যান্স হর্ন বাজাতে বাজাতে যাচ্ছিল। হাসপাতাল থেকে বাড়ির পথে রওনা দিয়ে রাস্তায় ওই তীব্র শব্দে অসুস্থ হয়ে যান তাঁর বাবা। সুজাতাদেবীর প্রশ্ন, কেন অ্যাম্বুল্যান্স অযথা তীব্র হর্ন বাজাতে বাজাতে যায়? কেন যে কোনও গাড়ি হাসপাতালের সামনের ‘নো হর্ন’ জ়োন মানবে না?

Advertisement

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলেরই অভিযোগ ছিল, ‘নো হর্ন’ বোর্ডে লেখা সত্ত্বেও তা মানা হয় না, সেটা নজরদারির কোনও উদ্যোগ কলকাতা পুলিশের তরফ থেকেও চোখে পড়ে না। একটি দিন নয়, এই সমস্যার সমাধানে যে ধারাবাহিক সচেতনতার প্রয়োজন, মানছেন সকলেই। তবে বছরভর পুলিশের নজরদারি এই সমস্যা কমাতে পারে বলেই মনে করছেন তাঁরা।

কী ভাবে চলল প্রচার? তিলজলা ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি সৌভিক চক্রবর্তী জানান, ই এম বাইপাসের আনন্দপুরের ওই হাসপাতালের সামনে এ দিন হর্ন দিলেন যাঁরা, তাঁদের ফুল ও লজেন্স দিয়ে বোঝানো হয়েছে সেখানে হর্ন দিলে রোগীদের পক্ষে তা কতটা অসহনীয় হতে পারে। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক, ফর্টিস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, পথ নিরাপত্তা সপ্তাহে আমাদের তরফ থেকে এই উদ্যোগ প্রথম। হাসপাতালের সামনে এর পরেও যদি হর্ন বাজানো হয়, তা হলে থানায় অভিযোগ জানানো হবে।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি-র বিভাগীয় প্রধান ইন্দ্রজিৎ কুণ্ডু বলছেন, ‘‘হর্নের টানা আওয়াজ দিনের পর দিন শুনলে ধীরে ধীরে স্নায়ু শুকিয়ে যায়। হৃদ্রোগীদের বিশেষ ভাবে ক্ষতিকারক এই শব্দ। অসুস্থ বা বয়স্কদের হর্নের আওয়াজে রক্তচাপ বাড়তে পারে, উত্তেজনা তৈরি হয়, মনসংযোগের ঘাটতিও হয়। তাই হাসপাতালের সামনে হর্ন না বাজানোই শ্রেয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement