—ফাইল চিত্র।
স্কুলের পরিকাঠামো ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনার জন্য অভিভাবকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত বসতে হবে। সেই সঙ্গে গুরুত্ব দিতে হবে অভিভাবকদের ফোরামকে। এই দাবিতে এ বার সরব হল শহরের বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকদের সংগঠনগুলি।
শহরের বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের নিয়ে তৈরি ইউনাইটেড গার্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বেসরকারি কয়েকটি স্কুলে অভিভাবকদের ফোরাম রয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ স্কুলই ফোরামগুলিকে গুরুত্ব দিতে চায় না। স্কুলের পরিকাঠামো সম্পর্কে অন্ধকারেই থেকে যেতে হয় অভিভাবকদের। আমাদের সংগঠনের দাবি, প্রতি মাসে বা দু’মাস অন্তর অভিভাবকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শিক্ষকদের বসতে হবে।’’ তাঁর মতে, স্কুলের পরিকাঠামোয় যদি কোনও খামতি থাকে, তা হলে আলোচনার মাধ্যমে সেগুলি উঠে আসবে।
শুক্রবার দক্ষিণ কলকাতার এক স্কুলের শৌচাগারে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ওই স্কুলের অভিভাবকদের সংগঠনের প্রেসিডেন্ট সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ঘটনার চার দিন পরেও স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসতে চাইছি। আমরা চাই স্কুলে অভিভাবকদের কয়েক জন প্রতিনিধি থাকুন। তাঁরা স্কুলগুলোর পরিকাঠামো এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করবেন।’’
অভিভাবকদের এই সংগঠনগুলির বক্তব্য, কোনও কোনও স্কুলে অভিভাবকদের প্রতিনিধি থাকলেও তা রয়েছে কার্যত খাতায়-কলমেই।
শহরের পরিচিত একটি বেসরকারি স্কুলের এক অভিভাবক অনীশ খানের অভিযোগ, ‘‘অনেক সময়ে অভিভাবকদের তরফে এমন এক জন প্রতিনিধি রাখা হয় যিনি স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছের লোক। ফলে তাঁর কাছ থেকে স্কুলের পরিকাঠামো, বা
নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনও প্রশ্ন উঠে আসে না।’’ অভিভাবকদের একাংশের আরও অভিযোগ, স্কুলের পরিকাঠামোর কোনও খামতি নিয়ে জানালে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোপে পর্যন্ত পড়তে হয়। দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি স্কুলের এক ছাত্রীর বাবা স্কুলের কিছু পরিকাঠামোগত খামতির কথা জানিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তির অভিযোগ, ‘‘আমার মেয়ে বেহালার একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ত। স্কুলের পরিকাঠামো নিয়ে আমি কর্তৃপক্ষকে বলায় মেয়েকে টিসি দিয়ে দেওয়া হয়। ওকে এখন বাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দূরে, অন্য একটি স্কুলে ভর্তি করতে বাধ্য হয়েছি।’’
যদিও কলকাতার বেশ কয়েকটি বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁদের স্কুলে অভিভাবকদের প্রতিনিধি আছেন এবং তাঁরা যথেষ্ট সক্রিয়। শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য, গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের প্রিন্সিপাল ইন্দ্রাণী মিত্র, সাউথ পয়েন্ট স্কুলের তরফে কৃষ্ণ দামানি— সকলেই জানান, তাঁদের স্কুলের অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করা হয় ও তাঁদের পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।