গঙ্গা ‘দখল’ খতিয়ে দেখতে কমিটি

গঙ্গার পাড়ের সৌন্দর্যায়নের নামে কলকাতায় গঙ্গাই দখল হয়ে যাচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে মামলা হয়েছিল। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এ বার বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করল জাতীয় পরিবেশ আদালত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৫ ০৩:১৯
Share:

রোস্তোরাঁ লাগোয়া এই ফুটব্রিজ ঘিরেই বিতর্ক। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

গঙ্গার পাড়ের সৌন্দর্যায়নের নামে কলকাতায় গঙ্গাই দখল হয়ে যাচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে মামলা হয়েছিল। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এ বার বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করল জাতীয় পরিবেশ আদালত।

Advertisement

কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বাধীন ওই কমিটি নব মহাকরণের উল্টো দিকে এবং নিমতলা শ্মশানঘাটে গঙ্গার অবস্থা সরেজমিন খতিয়ে দেখবে। তার পরে দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবে জাতীয় পরিবেশ আদালতে। বিচারপতি প্রতাপকুমার রায় ও বিশেষজ্ঞ সদস্য পি সি মিশ্রকে নিয়ে তৈরি জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছে।

এই ব্যাপারে জানুয়ারি মাসে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব গত ১৬ এপ্রিল পরিবেশ আদালতে একটি রিপোর্ট পেশ করেন। সুভাষবাবুর দাবি, ‘‘মুখ্যসচিব স্বাক্ষরিত প্রায় ৭০ পাতার ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, পাড়ের সৌন্দর্যায়নের জন্য হওয়া নির্মাণ গঙ্গাবক্ষে হয়নি, গঙ্গাতীরেই হয়েছে। কিন্তু ওই রিপোর্টে পরিবেশ আদালত যে সন্তুষ্ট হতে পারেনি, সেটাই এ দিন পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের মাধ্যমে।’’

Advertisement

সুভাষবাবুর অভিযোগ, পরিবেশ রক্ষা ও গঙ্গা সংরক্ষণের তোয়াক্কা না করে নব মহাকরণের উল্টো দিকে একটি রেস্তোরাঁর গা ঘেঁষে নদীবক্ষের উপরে ফুটব্রিজ বা পাথওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। একই ভাবে নিমতলা শ্মশানঘাটে গঙ্গার উপরেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিতে উদ্যান নির্মাণ করা হয়েছে বলে সুভাষবাবুর অভিযোগ। এর পক্ষে তিনি ছবিও পেশ করেন। কিন্তু ওই সব অভিযোগই মুখ্যসচিবের রিপোর্টে অস্বীকার করা হয়েছে।

রাজ্য সরকারের আরও দাবি, মুখ্যসচিবের রিপোর্ট নিয়ে আদালত অসন্তুষ্ট, সে কথা মোটেই বলা যাবে না। প্রশাসনের মতে, আদালত দু’পক্ষেরই বক্তব্য শুনে তৃতীয় পক্ষ অর্থাৎ একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে তাদের রিপোর্ট চেয়েছে এবং সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ দিন আদালতে রাজ্য সরকারের আইনজীবী জানান, সৌন্দর্যায়নের জন্য গঙ্গাবক্ষের উপরে আদৌ নির্মাণকাজ হয়েছে কি না, সেই ব্যাপারে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইড্রো-ডায়নামিক্স শাখার রিপোর্টও গণ্য হওয়া উচিত। তা ছাড়া, ন্যাশনাল গঙ্গা বেসিন অথরিটির যে নির্দেশিকা এই ব্যাপারে রয়েছে, সেটাও বিবেচনা করা প্রয়োজন।

পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মতো বিশেষজ্ঞ কমিটিতে বন্দরের বিশেষজ্ঞ ও ইঞ্জিনিয়ার, কেএমডিএ-র বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ও তাঁর সঙ্গে বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারেরা থাকবেন। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত এবং সব পক্ষের আইনজীবীদের নিয়ে কমিটির সদস্যেরা সরেজমিন সব দেখবেন বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৪ অগস্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement