রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
রাজ্যপাল কি এ বার পুর ভবনে আসবেন?
এস এন ব্যানার্জি রোডে কলকাতা পুরসভার প্রধান কার্যালয়ে এমনই গুঞ্জন চলছে গত কয়েক দিন ধরে। বিধানসভা চত্বরে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় এই জল্পনা। ওই ঘটনার পরেই পুর ভবনের অফিসারদের অস্বস্তি বাড়তে থাকে। আগ বাড়িয়ে কেউ কেউ বলেও ফেলেন, ‘‘রাজ্যপাল আবার পুর ভবনে আসবেন না তো? তা হলে কী করব আমরা?’’ আসলে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা প্রশাসনিক দফতর থেকে শুরু করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বা বিধানসভা ভবনে যাওয়ার যে কর্মসূচি রাজ্যপাল রাখছেন, তাতে কলকাতা পুর প্রশাসনের সদর দফতরকে তাঁর পরিদর্শনের কর্মসূচিতে রাখতে পারেন ভেবেই অস্বস্তি বাড়ছে পুর কর্তাদের।
পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এখান থেকে তো মানুষকে পুর পরিষেবা দেওয়া হয়। হঠাৎ রাজ্যপাল এখানে কেন আসবেন? শহর জুড়ে কলকাতা পুরসভার কাজকর্মের খোঁজখবর হয়তো নিতে পারেন।’’ পুরসভার সদর দফতরে রাজ্যপালের আসার কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না ওই অফিসার। তবে মুখে যে যা-ই বলুন, বর্তমান রাজ্যপালের গতিবিধি নিয়ে আগাম কিছু বলা যে কঠিন, গত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহ দেখে অনেকেই তা বুঝে গিয়েছেন। তাই সোজাসাপ্টা মন্তব্য করতে চাইছেন না কেউই। আড়ালে অনেকেই বলছেন, নিজে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হয়ে যিনি উপাচার্যের অফিসের বাইরে চেয়ারে বসে পড়তে পারেন, তাঁর কাছে কিছুই অসম্ভব নয়। জেলাশাসক না থাকলেও তাঁর প্রশাসনিক অফিসে চলে যাচ্ছেন। অপমানিত হতে পারেন জেনেও তিনি বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছেন। পুর অফিসারদের চিন্তা তা নিয়েই।
তবে পুরসভার এক উচ্চপদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘প্রোটোকল মেনে চললে পুর প্রশাসনকে একেবারে কিছু না জানিয়ে রাজ্যপালের পুর ভবনে আসার কথা নয়। আর পুর ভবনে আসার তো তেমন কোনও কারণও নেই।’’ আর এক অফিসারের মন্তব্য, ‘‘বলা যায় না, পুরসভার আর্কাইভ কেমন, সেটা দেখতেই হয়তো চলে এলেন। কবে কী কর্মসূচি, তা তো উনি নিজেই ঠিক করেন।’’ তবে রাজ্যপাল যদি পুর ভবনে আসেন, তা হলে গত কয়েক দিনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না তো? কোনও জবাব দিতে চাননি কেউ। মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, রাজ্যপাল পুর ভবনে এলে কী করবেন? মেয়রের জবাব, ‘‘এখানে বিল্ডিং ছাড়া কিছু নেই। কী আর দেখবেন? কলকাতা পুরসভা শহরে অনেক কাজ করেছে। সে সব দেখতেই পারবেন। কালীঘাট চত্বর, শ্মশানেও অনেক কাজ হয়েছে।’’