যাকে ঘিরে জিডি বিড়লা স্কুলে তুলকালাম কাণ্ড, সেই শিশুকন্যা এবং তার বাবা-মা গোপন জবানবন্দি দিলেন আলিপুর আদালতে।
ওই আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে বিচারক কেয়া বলের কাছে ওই শিশুকন্যা মিনিট পনেরো ধরে বয়ান দিয়েছে। শিশুটির সঙ্গে আদালতে এসেছিলেন তার বাবা ও মা। নিয়মবিধি অনুযায়ী বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার সময়ে বাবা বা মা কেউই শিশুর সঙ্গে থাকতে পারেন না। তবে এ দিন শিশুটির জবানবন্দির সময়ে তার মাকে বিচারকের ঘরে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কোনও ভাবে শিশুটি যদি অস্বস্তি বোধ করে, তা হলে মা তাঁকে সামলাতে পারবেন— এমন ভাবনা থেকেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে আদালতের খবর।
শিশুটির জবানবন্দি গ্রহণের পরে তার বাবা-মায়েরও জবানবন্দি নেন বিচারক। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে শিশুটি প্রথমে বাবা ও মাকেই নির্যাতনের বিষয়টি জানিয়েছিল। এক সরকারি আইনজীবী জানান, পকসো আইন অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে বাবা-মা ওই মামলার অন্যতম সাক্ষী। সেই জন্যই তাঁদের জবানবন্দি নেওয়া হল।
এ দিনই এমপি বিড়লা স্কুলে যৌন নিগ্রহের মামলায় ধৃত মনোজ মান্নাকে আলিপুরের পকসো বিশেষ আদালতে বিচারক রমেশ সিংহের এজলাসে তোলা হয়। তাঁকে পুলিশি হাজতে পাঠানোর আবেদনকে ঘিরে তুমুল বাদানুবাদ হয় সরকারি আইনজীবী ও অভিযুক্তের আইনজীবীর মধ্যে। সরকার পক্ষের আইনজীবী মাধবী ঘোষ দাবি করেন, ‘‘অভিযুক্তকে পুলিশি হাজতে নেওয়ার প্রয়োজন আছে। কারণ তিনি তদন্তকারীদের সঙ্গে কোনও রকম সহযোগিতা করছেন না। এক-এক সময়ে এক-এক রকম বয়ান দিচ্ছেন।’’
পাল্টা যুক্তি দেখান মনোজের আইনজীবী সেলিম রহমান। তিনি বলেন, ‘‘আমার মক্কেল চার দিন ধরে পুলিশি হেফাজতেই রয়েছেন। কিন্তু পুলিশ বয়ান সংগ্রহ করতে পারেনি।’’ তাঁর দাবি, মনোজ এক জন পিয়ন। তিনি এই ঘটনায় জড়িত নন।
বিচারক দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে মনোজকে জিজ্ঞেস করেন, ‘‘আপনি ঠিকঠাক বয়ান দিচ্ছেন না কেন?’’ উত্তরে মনোজ বলেন, ‘‘আমি ওই ধরনের কোনও ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। পুলিশ যা বয়ান চাইছে, তা আমি কী ভাবে দেব?’’
মনোজকে দু’দিন পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।