আঁস্তাকুড় বদলে গেল সবুজ পার্কে

১১০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ওই এলাকায় পার্ক করছে রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। দফতর সূত্রে খবর, এ কাজে প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে। নিম, অশ্বত্থ, কৃষ্ণচূড়া, নারকেল, খেজুরের মতো বড় গাছ রয়েছে ওই জায়গায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০২:০৯
Share:

সৌন্দর্যায়ন: ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে।

দীর্ঘ বছর ধরে আবর্জনা ফেলার জায়গা হয়ে গিয়েছিল। খোলা প্রস্রাবাগার হিসেবে ব্যবহার করতেন স্থানীয় দোকানদার এবং আশপাশের কয়েকটি অফিসের কর্মীরা। এমনই অবস্থা হয়ে গিয়েছিল পাটুলি এলাকার বাইপাস এবং বাইপাস লিঙ্ক রোডের ধারের বেশ অনেকটা জায়গা জুড়ে। ভোট চাইতে আসা প্রার্থীদের কাছে করজোরে অনুরোধ ছিল বাসিন্দাদের, যদি ভোটে জেতেন এই জায়গার কিছু ব্যবস্থা করবেন।

Advertisement

এ বার কথা রাখলেন দুই পুর প্রতিনিধি। সেজে উঠছে পরিত্যক্ত ওই দুই জায়গা। কলকাতা পুরসভার ১০১ ও ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ওই পার্ক দু’টি খুব তাড়াতাড়ি কলকাতা পুর এলাকার পরিকল্পিত উদ্যানগুলির তালিকায় ঢুকতে চলেছে।

বাইপাস লিঙ্ক রোডের ধারে ৩০০ মিটার লম্বা এবং ৩৫ মিটার চওড়া জায়গায় হচ্ছে চারটি পার্ক। ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ওই এলাকায় পার্ক করছে রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। দফতর সূত্রে খবর, এ কাজে প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে। নিম, অশ্বত্থ, কৃষ্ণচূড়া, নারকেল, খেজুরের মতো বড় গাছ রয়েছে ওই জায়গায়। সে সব রেখেই ঝোপ জঙ্গল সাফ করে গ্রিল দিয়ে ঘেরা হয়েছে পার্কগুলি। স্থানীয় কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চারটি পার্ক বলা ঠিক হবে না। একটি লম্বাটে জায়গা। পার্কের বুক চিরে এলাকায় ঢোকার গলি চলে যাওয়ায় ভাগ হয়ে গিয়েছে। চারটি ভাগ আলাদা করে চিহ্নিত করা হচ্ছে। কোনওটি বয়স্কদের জন্য, কোনওটি শিশুদের জন্য। বিশ্ব বাংলার প্রতীক থাকবে একটিতে। অন্য পার্কটি সকলের কথা ভেবে হচ্ছে।’’ পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর, জুলাইয়ে কাজ শেষ হয়ে যাবে।

Advertisement

১১০ নম্বর ওয়ার্ডে সেজে উঠছে পার্ক।

অন্য পার্কটি তৈরি হচ্ছে কলকাতা পুরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে। বাইপাসের পাটুলির দু’টি ঝিলের মাঝের এই পার্ক ২০০ ফুট লম্বা এবং ৭৫ ফুট চওড়া। রবীন্দ্র শিশু উদ্যান নামের ওই পার্কে ঢোকা যাবে ঝিলপার্ক দিয়ে। বাইপাস থেকে বিশ্ব বাংলার গ্লোবের সামনে দিয়েও ঢোকা যাবে। গত দু’বছরে পুরসভার ৫০ লক্ষ টাকা খরচে সেজে উঠেছে দু’টি ঝিল। প্রথম দু’টি ঝিলে চারটি ফোয়ারা

তৈরি হয়েছে। আরও সাতটি ফোয়ারা তৈরি করা হবে। প্রথম ও দ্বিতীয় ঝিলের উপরে ২০০/৫ ফুট দৈর্ঘ্যের লোহার হাওড়া ব্রিজ ও দ্বিতীয় হুগলি ব্রিজের প্রতিরূপ তৈরি করা হবে। ঝিলের এক দিকে থাকবে

দুর্গা ঠাকুর ভাসানের ফাইবারের মোটিফ। ফাইবার দিয়ে অন্য প্রান্তে ফুটিয়ে তোলা হবে ভাসান থেকে ফেরার দৃশ্য।

স্থানীয় কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ফাইবার দিয়ে তৈরি হবে রথে চেপে যাওয়া বিবেকানন্দের মূর্তি। বাইপাসের ধারে অনেকগুলি চেয়ার বসানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। ১৫টি থাকছে বয়স্কদের জন্য।

প্রাণি সম্পদ বিকাশ দফতরের হরিণঘাটার একটি স্টল ছাড়া অন্য কোনও খাবারের স্টল থাকবে না। আবর্জনা পেলার জন্য কয়েকটি বড় বিন বসানো হয়েছে। প্রতি দিন পুরসভার গাড়ি সেগুলি পরিষ্কার করে নিয়ে যাচ্ছে।’’ ঝিলের ধারে সুপুরি, নারকেল-সহ পাঁচশো গাছ বসানো হচ্ছে। পার্ক তৈরি ও আলো বসাতে কলকাতা পুরসভা ৫৩ লক্ষ টাকা দিয়েছে। দু’টি সেতুর প্রতিলিপি করতে খরচ হচ্ছে ১০ লক্ষ টাকা। ওই এলাকারই তৃতীয় ঝিলটি সাজাতে মেয়র আরও এক কোটি টাকা মঞ্জুর করেছেন বলে পুরসভা সূত্রে খবর।

ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement