কোথাও খিচু়ড়ি, কোথাও পোলাও। অধিকাংশ জায়গাতেই নিরামিষ। তবে কোথাও কোথাও আমিষও হাজির। আবার কোথাও বা বাঙালিয়ানার রীতিরেওয়াজ পেরিয়ে একেবারে রাজপুতানার খাবার! গেরস্থ বাড়ি হোক বা বারোয়ারি, কলকাতার পুজোর ভোগে বৈচিত্র কম নয়।
পুজোয় সনাতন পন্থার মতো মহাষ্টমীর ভোগেও সাবেকিয়ানা মেনে চলে একডালিয়া এভারগ্রিন। সুগন্ধি চালের খিচুড়ি, পাঁচ রকম ভাজা, পায়েসের সঙ্গে হলুদ পোলাও, ধোকার ডালনা, পনিরের তরকারি...। পুরোপুরি সাবেকি নয়, তবে অষ্টমীর পুজোয় বাগুইআটি স্পোর্টস কাউন্সিলেও দুর্গার পাতে পড়ে সাদা পোলাও, আলুর দম, ভেজিটেবল চপ, পায়েস। যাদবপুর রামগড়ের ঘটকবাড়ির দুর্গা আমিষাশী। পুজোর তিন দিনই পাঁঠাবলি হয় সেখানে। শাক্তমতের ওই বা়ড়ির দুর্গাপুজোয় মহাপ্রসাদ থাকে রোজই।
বৈচিত্র রয়েছে মহানবমীর ভোগেও। সত্তরের দশকের কাছাকাছি বাংলাদেশ থেকে এসে খড়দহে থাকতে শুরু করে ভট্টাচার্য পরিবার। মহানবমীর দিনে ‘ইলিশ ভোগ’ সেই বাড়ির বিশেষত্ব। গৃহকর্তা স্মৃতিরঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, নবমীতে মা দুর্গাকে ইলিশ ভোগ দেওয়া হয়। মহানবমীর পরে বেশ কিছু দিন ওই বাড়িতে আর ইলিশ ঢোকে না। আবার ইলিশ আনা হয় সেই সরস্বতী পুজোয়।
খিদিরপুরের ২৫ পল্লির পুজোয় সপ্তমী থেকেই ভোগ হয়। প্রথম দিন অর্থাৎ সপ্তমীতে ছিল খিচুড়ি, অষ্টমীতে লুচি। তবে নবমীর পোলাও ভোগ তাদের বিশেষত্ব। পাড়ার বাসিন্দা, পরিচিতদের মধ্যে ভোগ বিলি করাও ওই ক্লাবের রীতি।
উত্তরের কাশী বোস লেনে ভোগ শুরু হয়ে যায় ষষ্ঠীতেই। তবে নবমীর দিন ‘ছাপ্পান্ন ভোগ’ তাদের আলাদা পরিচিতি দিয়েছে। বাঙালিয়ানা ছেড়ে সেই ভোগে হাজির রাজপুতানার কাঞ্জিব়ড়া, ইমলি বড়া, সাংরি শাক, জিলিপি, বাদাম বরফি। ভবানীপুর অবসরে আবার ভোগের পাশাপাশি পাত পেড়ে পেটপুজোর আয়োজন থাকে। হিন্দুস্থান পার্ক সর্বজনীনেও নবমীর আমিষ ভোজ ‘বিখ্যাত’!
পুজোর জন্য বাঙালির খ্যাতি। তারা বিখ্যাত পেটপুজোতেও!