—প্রতীকী চিত্র।
আবারও বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে রইল এলাকার শ’খানেক বাড়ি। ঘণ্টা তিনেক পরে কিছু বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরলেও শুক্রবার রাত পর্যন্ত অন্ধকারে ডুবে রইল গোটা তিরিশেক বাড়ি। এ বারের ঘটনাস্থল, ঢাকুরিয়ার তনুপুকুর রোড এবং সংলগ্ন এলাকা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ বিদ্যুৎ চলে যায়। সিইএসসি-র তরফে অবশ্য অন্য দিনের মতোই দাবি করা হয়েছে, বেআইনি সংযোগই এমন বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ।
শহরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির আশপাশে। দুপুরের গনগনে তাপে বাস-ট্রেন, রাস্তা প্রায় ফাঁকা। অথচ, নিস্তার নেই ঘরেও। গত বছরের মতো এ বছরও ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনায় আতঙ্কিত শহরবাসী। দমদম, রাজারহাট, বিধাননগর, পিকনিক গার্ডেন-সহ কলকাতার একাধিক জায়গা এবং হাওড়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক দিন ধরেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার অভিযোগ আসছে। ঢাকুরিয়ার ওই এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনার সময়ে ট্রান্সফর্মারে বিস্ফোরণ হয়ে আগুন লেগে গিয়েছিল। তার পরেই শ’খানেক বাড়ির বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ৭০টি বাড়িতে শেষ রাতে বিদ্যুৎ ফিরলেও বাকি বাড়িগুলি শুক্রবার রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎহীন। বাসিন্দাদের দাবি, ক্ষোভ সামাল দিতে সিইএসসি জেনারেটরের সাহায্যে ওই বাড়িগুলিতে অস্থায়ী ভাবে বিদ্যুতের জোগান দিচ্ছে।
বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, সিইএসসি-র কর্মীরা কাজ করছেন। স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, কয়েক বছর ধরেই এপ্রিল-মে নাগাদ ট্রান্সফর্মার বিকল হওয়ার ঘটনা ঘটছে। গত পাঁচ-সাত দিন ধরে দুপুরে বা গভীর রাতে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছিল। সিইএসসি-কে সেই অভিযোগই জানানো হয়। তার পরেই সিইএসসি-র কর্মীরা মেরামতির জন্য রাস্তা খোঁড়েন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ট্রান্সফর্মারে বিস্ফোরণ হয়ে আগুন লাগে। খোঁড়া জায়গা থেকে ধোঁয়া বেরোয়। বিদ্যুৎহীন হয়ে যায় শ’খানেক বাড়ি। দমকলের একটি ইঞ্জিন পৌঁছে আগুন নেভায়। স্থানীয় বাসিন্দা অভিনব মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘সিইএসসি-কে বার বার ফোন করা হলেও কাজ না হওয়ায় গরফা থানায় ফোন করি। পুলিশের থেকে খবর পেয়ে সিইএসসি-র কর্মীরা আসেন। কিন্তু তাঁরা অস্থায়ী সমাধান করতে চাইলে সমাজমাধ্যমে আমরা পোস্ট করি। তখন সিইএসসি বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়। জেনারেটর এনে অস্থায়ী বিদ্যুৎ পরিষেবা ফেরায়। শুরু হয় মেরামতি।’’
সিইএসসি-র তরফে বলা হয়েছে, ট্রান্সফর্মারে সমস্যা হয়নি। অনুমোদনহীন এসি-র জন্য ভূগর্ভস্থ লাইনে ভার বেড়ে বিপত্তি ঘটে। বিষয়টি জানার পরেই জেনারেটরের মাধ্যমে এলাকায় অস্থায়ী বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। ভূগর্ভস্থ কেব্ল সারানো চলছে।
এ দিন বিদ্যুৎ ভবনে সিইএসসি-র শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বৈঠকে সিইএসসি কর্তৃপক্ষকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে বলা হয়েছে। যান্ত্রিক গোলযোগ হলে দ্রুত তা গ্রাহকদের এসএমএস-এর মাধ্যমে জানাতে ও মেরামতির সময়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে বলেছেন মন্ত্রী। সেই সঙ্গে মেরামতির জন্য মোবাইল ভ্যান ও কর্মী বাড়াতে বলা হয়েছে সিইএসসি কর্তৃপক্ষকে।