গড়িয়াহাটের আগুনে দায়ের হল অভিযোগ

তিন দিন কেটে গেলেও গুরুদাস ভবনের বাসিন্দারা কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৪০
Share:

গড়িয়াহাটের বহুতলে আগুন। নিজস্ব চিত্র

গড়িয়াহাটের গুরুদাস ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ওই বহুতলের মালিক ও দখলদারদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করল দমকল।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে দমকলের গড়িয়াহাট কেন্দ্রের অফিসার ইন-চার্জ সুজিত সাউ অভিযোগটি দায়ের করেন। তবে সেই অভিযোগে অভিযুক্ত হিসেবে কারও নামের উল্লেখ করা হয়নি। শুধুমাত্র ১৬১বি, রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের বাড়ির মালিক ও দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। দমকল সূত্রের খবর, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ফায়ার সার্ভিস অ্যাক্ট’-এর ১১জে ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। যাতে বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে দাহ্য পদার্থ বা বিস্ফোরক মজুত রাখা, রক্ষণাবেক্ষণ না করা-সহ দমকল আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে পুড়ে যাওয়া দোকান বা ফ্ল্যাটে কোনও ফায়ার লাইসেন্স ছিল না বলেও অভিযোগ করা হয়েছে দমকলের তরফে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৮৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী গাফিলতির ধারাও আনা হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।

দমকল সূত্রের খবর, শনিবার রাতে আগুনের খবর পেয়ে দমকলের ২০টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়। প্রায় ১৩ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আনেন দমকলের কর্মীরা। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ওই বহুতলে কোনও ধরনেরই অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। ফলে তাঁদের আগুন নেভাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানকার ৯টি দোকানের এবং পাঁচটি ফ্ল্যাটের মালিকদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যার মধ্যে রয়েছে ট্রেডার্স অ্যাসেম্বলি এবং আদি ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়ের মতো শাড়ি বিপণিও। পুলিশের একটি অংশ অবশ্য জানিয়েছে, অভিযোগ দায়ের করা হলেও বাগড়ি মার্কেটের মতো এ ক্ষেত্রেও ‘ধীরে চলো’ নীতি নেওয়া হতে পারে পুলিশের তরফে।

এ দিকে, তিন দিন কেটে গেলেও গুরুদাস ভবনের বাসিন্দারা কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। সোমবার রাতে যে আবাসিকেরা ওই বাড়িতে ছিলেন, মঙ্গলবার তাঁরাও ওই বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়দের বাড়ি চলে যান। অনেকেই নিজেদের ফ্ল্যাটের পোড়া জিনিসপত্র পরিষ্কার করানোর জন্য সকালে এসে আবার রাতে ফিরে যাচ্ছেন আত্মীয়ের বাড়িতে। এ রকমই এক জন নন্দিতা সমাজপতি। তাঁর অভিযোগ, মঙ্গলবার ভোর থেকেই ঘটনাস্থলের পুড়ে যাওয়া জিনিসপত্র সরিয়ে দিয়েছেন পুরসভার লোকজন। অথচ, যে ফ্ল্যাটের একাংশ পুড়ে গিয়েছে, সেখানকার পোড়া জিনিসপত্র তাঁদের নিজেদের টাকা খরচ করে সরাতে হচ্ছে। একই ধরনের অভিযোগ শোনা গিয়েছে ওই ভবনের অন্য এক আবাসিকের মুখেও। তিনি বলেন, ‘‘যে হকারদের প্লাস্টিকের জন্য আগুন এত বড় আকার নিল, যাঁরা বেআইনি ভাবে বহুতলের ভিতর থেকে বিদ্যুতের লাইন নেন, তাঁদের সরকার ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে। অথচ, যাঁদের কয়েকটি ফ্ল্যাটের একাংশ পুড়ে বড় ক্ষতি হল, তাঁদের জন্য সরকারের কোনও ক্ষতিপূরণ নেই!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement