কেষ্টপুরের এই আবাসনের ফ্ল্যাটমালিকদের কাছেই এসেছে ফ্ল্যাট ছাড়ার নোটিস। নিজস্ব চিত্র
পুজোর আগেই শিয়রে সমন! তা-ও একেবারে ঠাঁইনাড়া হওয়ার।
বছরকয়েক আগে কেষ্টপুরের এক আবাসনে ফ্ল্যাট কিনেছিল ২৮টি পরিবার। সেই সমস্ত পরিবারের অনেকেই অবসরপ্রাপ্ত। টাকা নিয়েও প্রোমোটার রাজেশ জায়সওয়াল রেজিস্ট্রি করেননি। কয়েক বছর পরেই তাঁরা জানতে পারেন, ফ্ল্যাটগুলি দু’টি বেসরকারি ব্যাঙ্কের কাছে গচ্ছিত। ফ্ল্যাট নিতে ‘ডেট রিকভারি ট্রাইবুনাল’-এ মামলা হয়। ক্রেতারা প্রোমোটারের নামে ফৌজদারি মামলা করেন। ইতিমধ্যে ট্রাইবুনালে হেরে গিয়েছেন ক্রেতারা। তার পরেই জেলাশাসকের মাধ্যমে নোটিস এসেছে, ২ অক্টোবরের মধ্যে ফ্ল্যাট খালি করতে হবে। অতঃপর প্রশ্ন, কোথায় গিয়ে দাঁড়াবেন তাঁরা?
ওই আবাসনটি কেষ্টপুরের বারোয়ারিতলায়। সোমবার সেখানে গিয়ে জানা গেল, ছ’টি ফ্ল্যাটে নোটিস পাঠানো হয়েছে। বাকি ২২টি ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের আশঙ্কা, যে কোনও দিন তাঁদের কাছেও নোটিস আসবে। বাস্তুহারা হওয়ার ভয়ে তাঁরা রীতিমতো কাঁটা। তাঁরা জানান, ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট কিনেছেন। বছর দশেক ধরে কিস্তির টাকা দিয়েছেন। এখন ফ্ল্যাট ছাড়তে হলে সেই টাকার কী হবে? প্রশ্ন উঠেছে, ব্যাঙ্ক ঋণ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ফ্ল্যাটের ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ নেয়। তা হলে এ ক্ষেত্রে গরমিল ধরা পড়ল না কেন? না কি ঋণ মঞ্জুর হওয়া এবং টাকা লেনদেনের মাঝের সময়ে কারসাজি হয়েছে? ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রি না হলে ব্যাঙ্ক পুরো টাকা মেটায় না। তা হলে এ ক্ষেত্রে কি অন্য কিছু হয়েছিল? ওই বিপদগ্রস্তদের মধ্যে রয়েছেন এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের প্রাক্তন কর্তা সোমনাথ চৌধুরীও। তিনিও প্রোমোটারের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনেছেন।
ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা জানান, ইতিমধ্যেই রাজেশ প্রয়াত হয়েছেন। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলার ভবিষ্যৎ কার্যত অন্ধকারে। সব মিলিয়ে পুজোর আগে আচমকা অন্ধকার নেমে এসেছে ওই আবাসনে।