Kali Puja

কালী-কথা: ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি

তেত্রিশ কোটি দেবদেবী। প্রধান উপাস্য মা কালী। বাঙালির বড় অংশ শাক্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়— সকলেই কালীভক্ত। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণও কালীর উপাসনা করতেন। কালীর মন্দির সর্বত্র। কিন্তু কোন মন্দিরে যাবেন। এবং কেন। আপনাদের জন্য ক্ষুদ্র নির্দেশিকা।১৮৮০ সালে মন্দির হস্তান্তরিত হয় পোলবার বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের কাছে। সে অঞ্চলের ফিরিঙ্গিরা অনেকেই এখানে পুজো দিতেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২০ ১৪:১০
Share:

কে

Advertisement

শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমাতা

কেন

Advertisement

ঐহিকে লোক ভিন্ন ভিন্ন / অন্তিমে সব একাঙ্গী। উত্তমকুমার আর প্রসেনজিতের সূত্রে গানের সঙ্গে বাঙালির জীবন জড়িয়ে গিয়েছে। আসলে তাঁদের অভিনীত অ্যান্টনি কবিয়াল চরিত্রের সূত্রে। যে সূত্রে বাঙালিকে বেঁধেছিল ‘অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি’ আর হালে বেঁধেছে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘জাতিস্মর’। উনিশ শতকে পর্তুগিজ বংশোদ্ভূত কবিয়াল অ্যান্টনি হেন্সম্যান এই দেবস্থানে এসেই বুঝেছিলেন, আসলে খ্রিস্ট আর কৃষ্ণ অভিন্ন। ভালবেসে বাংলাভাষার আঙিনায় ঢুকে ভিনদেশি কবি দেবী কালিকার উপাসক হয়ে গিয়েছিলেন। অ্যান্টনি কবিয়াল ফিরিঙ্গি থাকেননি। বরং সিদ্ধেশ্বরী কালীমাতা হয়ে গিয়েছেন ফিরিঙ্গি কালী। যদিও ঐতিহাসিক রাধারমণ মিত্র এর সঙ্গে একমত নন। তিনি তাঁর ‘কলকাতা দর্পণ’ বইয়ে লিখেছেন, অ্যান্টনি কবিয়ালের সঙ্গে ফিরিঙ্গি কালীবাড়ির কোনও সম্পর্ক নেই। এটি অপপ্রচার।

কোথায়

২৪৪, বিপিন বিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০১২

কখন

মন্দিরের ফলকে প্রতিষ্ঠার সাল ৯০৫ বঙ্গাব্দ। তখনও খাতায়কলমে শহর কলকাতার জন্ম হয়নি। ভাগীরথী নদী আর তাকে ঘিরে কিছু খাল এই অরণ্যসঙ্কুল অঞ্চলে জালের মতো ছড়িয়েছিল। সেই বনেই পাতার ছাউনিতে ছিল শিব ও শীতলার মন্দির। সেখানেই পরে প্রতিষ্ঠিত হয় মাটির কালীমূর্তি। পরবর্তী সময়ে এখানে গড়ে উঠেছিল ইওরোপীয়দের বসতি। সেখানেই আত্মীয়ের বাড়িতে আসতেন চন্দননগরের অ্যান্টনি। তখন মন্দিরের দেখাশোনা করতেন বিধবা প্রমীলাদেবী। তাঁর সঙ্গেই প্রণয়ে আবদ্ধ হন অ্যান্টনি সাহেব। ১৮৮০ সালে মন্দির হস্তান্তরিত হয় পোলবার বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের কাছে। সে অঞ্চলের ফিরিঙ্গিরা অনেকেই এখানে পুজো দিতেন।

এখন

মধ্য কলকাতার এই কালীমন্দির উনিশ শতক থেকেই জনপ্রিয়। সিদ্ধেশ্বরী প্রতিমার পাশে অষ্টধাতুর দুর্গা, জগদ্ধাত্রীর মূর্তি ও নারায়ণ শিলা। সেবাইত অঙ্কেশ বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, এখনও পূজা হয় সম্পূর্ণ বৈদিক মতে। একদা পশুবলি হলেও থাকলেও এখন আর তা হয় না। এখন মন্দিরের ৬ শরিক। সেই অনুযায়ী পালা পড়ে। এ বছর যাবতীয় আচার মেনেই কালীপূজা সম্পন্ন হবে। কোভিড অতিমারির জন্য থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা। মন্দিরে একসঙ্গে ৫ থেকে ৮ জনের বেশি ঢুকতে দেওয়া হবে না। আগত ভক্তজনেদের সকলেরই ক্ষেত্রেই মাস্ক ও স্যানিটাইজার বাধ্যতামূলক।

এর পর: চিত্তেশ্বরী মন্দির

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement