Firhad Hakim

বর্ষাতি কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ

২০১৮ সালে কলকাতা পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলির পড়ুয়াদের জন্য ৭৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকায় ২২ হাজার ৪০টি বর্ষাতি কেনা হয়। বর্ষাতি কেনার এই প্রক্রিয়ায় পুর শিক্ষা বিভাগ নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে এগোনোয় আপত্তি জানিয়েছিল পুর অর্থ বিভাগ।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৪ ০৭:০৫
Share:

মেয়র ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।

কলকাতা পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলির পড়ুয়াদের জন্য বর্ষাতি কেনার ক্ষেত্রে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তদানীন্তন দুই পুর আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বর্ষাতি-কেলেঙ্কারির ওই ঘটনায় আগেই সাত সদস্যের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি সম্প্রতি রিপোর্ট জমা দিয়েছে। মঙ্গলবার মেয়র বলেন, ‘‘কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তদানীন্তন দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। পুর বোর্ড দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে না। দুর্নীতি করেও যাঁরা পার পেয়ে যাবেন ভাবছেন, তাঁরা ভুল করছেন। দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত পুরকর্মীদের বিরুদ্ধে পুরসভা কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে কলকাতা পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলির পড়ুয়াদের জন্য ৭৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকায় ২২ হাজার ৪০টি বর্ষাতি কেনা হয়। বর্ষাতি কেনার এই প্রক্রিয়ায় পুর শিক্ষা বিভাগ নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে এগোনোয় আপত্তি জানিয়েছিল পুর অর্থ বিভাগ। পুরসভা সূত্রের খবর, বর্ষাতি কেনার জন্য দরপত্র প্রক্রিয়ায় ‘ছাড়’ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে মেয়রের কাছে ফাইল যায়। কিন্তু মেয়র ওই ফাইলের উপরে ‘নো’ লিখে জানান, এ ভাবে দরপত্র প্রক্রিয়া করা যাবে না। অভিযোগ, মেয়রের বারণ উপেক্ষা করেই পুর শিক্ষা বিভাগের তরফে দরপত্র ছাড়া ৭৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকায় ২২০৪০টি বর্ষাতি কেনা হয়! যে পদ্ধতিতে বর্ষাতি কেনা হয়, তা নিয়মবিরুদ্ধ বলে আগেই পুরসভার অভ্যন্তরীণ অডিটে ধরা পড়েছে।

পুরসভার রেসিডেন্সিয়াল অডিটর তাঁর রিপোর্টে সাফ অভিযোগ করেছিলেন, একাধিক সংস্থাকে সুযোগ পাইয়ে দিতে মোটা টাকার বর্ষাতি কেনা হয়েছিল সম্পূর্ণ নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে। বছরখানেক আগে পুরো বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ মেয়র দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে তদানীন্তন পুর কমিশনার বিনোদ কুমারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। বর্ষাতি কেনার ক্ষেত্রে কী পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত ছিল এবং তদানীন্তন পুর শিক্ষা বিভাগের আধিকারিকেরা কী পন্থা নিয়েছিলেন, সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করে সাত সদস্যের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি মেয়রের কাছে তা জমা দিয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই রিপোর্টে কমিটি জানিয়েছে, বর্ষাতি কেনার ক্ষেত্রে বড়সড় গরমিল রয়েছে। রিপোর্ট দেখেই মেয়র শিক্ষা বিভাগের তদানীন্তন দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।

Advertisement

পুরসভার স্কুলগুলিতে শৌচাগার-দুর্নীতি কাণ্ডের জেরে ইতিমধ্যেই পুর শিক্ষা বিভাগের তদানীন্তন চার আধিকারিক ও কর্মীর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে পুরসভা। শৌচাগার সংস্কারে দুর্নীতি ও বর্ষাতি কেলেঙ্কারির সময়ে একই আধিকারিকেরা কর্মরত ছিলেন। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘দু’টি ক্ষেত্রেই দুর্নীতি হয়েছে, তা পরিষ্কার।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement