কারখানার আগুন নেভানোর পরে জলে ভাসছে পুড়ে যাওয়া চটি। বৃহস্পতিবার, তপসিয়ায়। —নিজস্ব চিত্র।
আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেল রবারের চপ্পল তৈরির একটি কারখানা ও গুদামঘর। আগুন ছড়িয়ে পড়ায় পাশের আরও একটি চপ্পল কারখানাও পুড়ে গিয়েছে বলে খবর। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে তপসিয়ার সাপগাছি ফার্স্ট লেনে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও ঘিঞ্জি এলাকায় আগুন লাগায় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয়। দমকলের আটটি ইঞ্জিন প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
দমকল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ওই কারখানার ভিতরে আগুন প্রথমে দেখতে পান সেখানকারই কয়েক জন কর্মী। তাঁরাই কিছু ক্ষণ আগে ওই কারখানা খুলেছিলেন। ওই কর্মীরা চিৎকার করে লোকজনকে সতর্ক করতে থাকেন। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, কয়েক মুহূর্তের মধ্যে ভয়াল আগুন পুরো কারখানাটিকেই গ্রাস করে ফেলে। ওই কারখানার গলি এতটাই সঙ্কীর্ণ যে, সেখানে দমকল ঢুকতে পারেনি। তাই মূল রাস্তা থেকে পাইপের মাধ্যমে কারখানায় জল ছুড়ে দেওয়া হচ্ছিল। ওই কারখানাটি একটি চারতলা বহুতলের একতলায় অবস্থিত। দোতলায় রয়েছে গুদাম। তিন ও চারতলায় একাধিক পরিবারের বাস। কারখানায় আগুন লাগার খবর পেয়ে তিন ও চারতলার বাসিন্দারা আতঙ্কে নীচে নামতে শুরু করেন। ওই বাড়ির তেতলায় সপরিবার থাকেন ফারিদা খাতুন। তিনি পেশায় শিক্ষিকা। ফারিদা বলেন, ‘‘প্রথমে রবার পোড়ার গন্ধ পাই। তার পরে দেখি, বাড়ির নীচের অংশ ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে। বুঝতে পারি, আগুন লেগেছে। আমার মা হাঁটাচলা করতে পারেন না। মাকে কী ভাবে বার করব, তা ভেবেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। ওই পরিস্থিতিতে এলাকার কয়েক জন যুবক তেতলায় উঠে মাকে পাঁজাকোলা করে নীচে নামিয়ে আনেন। নীচে এসে দেখি, কারখানা দাউ দাউ করে জ্বলছে। কোনও মতে বেঁচে যাই।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে। এলাকার আর এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘কারখানার এক দিকের শাটার বন্ধ ছিল। সেই শাটার ভেঙে ঢুকে আগুন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা হয়। দমকলকে খবর দেওয়ার আগেই পাড়ার বাসিন্দারা জল দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন।’’ এলাকার বাসিন্দারা জানান, আগুন লাগার প্রায় আধ ঘণ্টা পরে দমকল আসে। ওই কারখানার ঠিক পাশেই রয়েছে সানা আলম নামে এক মহিলার চপ্পল তৈরির কারখানা। সানা বলেন, ‘‘ওই কারখানা থেকে আমার কারখানার ভিতরেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চাল ফুটো হয়ে যায়। আমার কারখানাও পুরোটাই পুড়ে গিয়েছে।’’
ঘটনাস্থলে থাকা দমকলের এক আধিকারিক জানান, ওই কারখানায় কোনও রকম অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না বলেই প্রাথমিক তদন্তে তাঁরা জানতে পেরেছেন। কী কারণে আগুন লাগল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।