Kolkata news

দশ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে গড়িয়াহাট মার্কেটের আগুন, কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা

রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছেছেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। পৌঁছেছেন দমকল কর্তাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩৪
Share:

দশ ঘণ্টা লড়াই। অবশেষে নিয়ন্ত্রণে গড়িয়াহাট মার্কেটের আগুন।

প্রায় দশ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে গড়িয়াহাট মার্কেটের আগুন। প্রাথমিক ভাবে অগ্নিকাণ্ডের জেরে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Advertisement

শনিবার গভীর রাতে যখন এলাকা ঘুমে আচ্ছন্ন, সে সময়ে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটে গড়িয়াহাট মার্কেটে। খবর পেয়ে দমকলের ২০টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু এবং একাধিক দমকল কর্তাও। শনিবার গভীর রাতের সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে রবিবার বেলা ১১টা বেজে যায়। আগুনের জেরে বহুতলের দেওয়ালে ফাটল দেখা দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বাড়ির দেওয়াল কেটে ভিতরে ঢোকেন দমকল কর্মীরা। অবশেষে দশ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে লড়াই চালানোর পর নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয় আগুন।

দমকল সূত্রের খবর, গড়িয়াহাট মোড়ে শনিবার গভীর রাতে একটি পাঁচ তলা বহুতলে আগুন লাগে। বহুতলের নীচে কাপড়ের দোকানে প্রথমে আগুন লাগে। সেখান থেকেই তা ছড়িয়ে পড়ে। ওই বাড়িতে রয়েছে নামী পোশাকের বিপণি-সহ বেশ কিছু দোকান ও আবাসিক ফ্ল্যাট। তাতে থাকেন জনা ৪৫। আগুন লাগে রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ। প্রাথমিক ভাবে, আগুনের জেরে কয়েক জন আবাসিক আটকে পড়েন বলেও দমকল সূত্রে জানানো হয়েছিল। তবে, আটকে পড়া প্রত্যেককে উদ্ধার করা সম্ভব হয় বলে রবিবার সকালে দমকলের তরফে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, বেশ কয়েকটি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। দমকল কর্মীরা জানাচ্ছেন, আগুন লাগার পরে বাকি সব বাসিন্দা নেমে এলেও পা ভাঙা থাকায় এক মহিলা আটকে পড়েন। পরে দমকল ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করেছেন।

Advertisement

আগুন নেভানোর কাজে ব্যস্ত দমকল কর্মীরা।

আরও পড়ুন: ব্রিগেডে পরিশুদ্ধ জল পৌঁছতে রাস্তায় দেখা গেল ভ্রাম্যমান এটিএম

এখনও আগুন লাগার সঠিক কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা সম্ভব হয়নি। প্রাথমিক ভাবে দমকলের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই এই ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের পরই আগুন লাগার কারণ স্পষ্ট জানা যাবে বলে দমকলের তরফে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: জরুরি অবস্থারও প্রয়োজন নেই, এমনিই সাষ্টাঙ্গ প্রণিপাত

দমকল সূত্রে খবর, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ওই এলাকা ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। ফলে ভিতরে প্রবেশ করে উৎসস্থলে পৌঁছতে অসুবিধায় পড়েন দমকল কর্মীরা। বেশ কয়েকটি দোকানের শাটার কেটে ভিতরে ঢোকেন দমকল কর্মীরা।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর দোকান থেকে বের করা হচ্ছে পুড়ে যাওয়া কাপড়।

দমকল কর্মীরা জানান, বাগরির মতো এ ক্ষেত্রেও পকেট ফায়ারের কারণে পরিস্থিতি জটিল আকার নিয়েছিল। দাহ্য পদার্থ থাকায় দ্রুত আগুন পাশের কয়েকটি দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ফলে এলাকাবাসীরা। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিক ছিল না বলে দমকলের তরফে অভিযোগ করা হয়। দমকলের অনুমান বাইরে থেকে আগুন লেগেছে। পরে তা ভিতরে ছড়িয়ে পরে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় দমকলকে। কাপড়ের গুদামে আগুন লাগার কারণ তা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে বার বার প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হয় দমকলকে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে আনা হয় হাইড্রোলিক ল্যাডার।

আগুন লাগার পর। গড়িয়াহাটে। শনিবার রাতে।

এ দিকে আগুনের জেরে গড়িয়াহাটের রাস্তার একাংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগ্নিকান্ডের জেরে যান চলাচলের উপর নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয়েছে। যে গাড়িগুলো রাসবিহারী দিক থেকে বালিগঞ্জের দিকে যাচ্ছে, সেগুলোকে যতীন বাকচী রোড-পূর্ণদাস রোড হয়ে গোলপার্কে নিয়ে আসা হচ্ছে। সেখান থেকে গড়িয়াহাট ফ্লাইওভার হয়ে বালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে বালিগঞ্জের দিকে পাঠানো হচ্ছে।অন্যদিকে, বালিগঞ্জের দিক থেকে যে গাড়িগুলোর যাচ্ছে সেগুলোকে গড়িয়াহাট মোড় থেকে গোলপার্কের দিকে পাঠানো হচ্ছে। গোলপার্কের দিক থেকে যে গাড়িগুলো পার্ক সার্কাসে দিকে যাচ্ছে সেই গাড়িগুলো গড়িয়াহাট ফ্লাইওভার ব্যবহার করছে। রবিবার, ছুটির দিন হওয়ায় ট্রাফিকের চাপ অন্যান্য দিনের থেকে অনেকটাই কম। সে কারণ, যানজট অপেক্ষাকৃত কম বলেই ট্রাফিকের তরফে জানানো হয়েছে।

—নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement