তখনও ধোঁয়ায় ঢাকা। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র
চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশনালের অগ্নিকাণ্ডের পর এক মাসও পেরোয়নি। ফের আগুন শহরের বহুতলে। রবিবার পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার একটি বহুতলের চারতলার অফিসে আগুন লাগে। দমকলকর্মীরা গিয়ে দেখেন অফিসটি ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে। রবিবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ ৫৩-এ মির্জা গালিব স্ট্রিটের ঘটনা। দমকলের চারটি ইঞ্জিন আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও সিইএসসি কর্মীরা। এর জেরে আতঙ্ক ছড়ায় বহুতলের কর্মচারী ও আশেপাশের বাসিন্দাদের মধ্যে।
দমকল জানিয়েছে, আগুন লাগে একটি বেসরকারি সংস্থার অফিসে। বহু জরুরি নথি, কম্পিউটার ও অন্যান্য জিনিস পুড়ে গিয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব মেলেনি। দমকল জানায়, ঘটনার সময়ে অফিস বন্ধই ছিল। তবে ছ’তলা ওই ভবনের কয়েকটি অফিসে কর্মচারী ও তিন জন কেয়ারটেকার ছিলেন। তাঁরাই প্রথম দমকলে জানান। তখন পাঁচতলার এক বেসরকারি সংস্থার কর্মী শ্যামল ঘোষ অফিসেই ছিলেন। তিনি জানান, এমনিতে রবিবার অফিস বন্ধ থাকে। তবে মাসের শেষে মাঝেমধ্যে রবিবারও অফিসে আসতে হয়। তিনি আচমকা প্রচুর ধোঁয়া এবং চিৎকার শুনে হকচকিয়ে যান। সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে দেখেন সেখানেও ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে।
দমকলের এক আধিকারিক জানান, সকাল দশটা নাগাদ ওই বহুতলের এক নিরাপত্তারক্ষী দমকলে ফোন করেন। তার মিনিট দশেকের মধ্যেই দমকলের চারটি গাড়ি পৌঁছয়। কিন্তু ওই বহুতলের প্রথমতলা পর্যন্ত ধোঁয়ায় ভরে যাওয়ায় উপরে উঠতে সমস্যায় পড়তে হয় দমকল বাহিনীকে। পরে মই লাগিয়ে জানালার কাচ ভেঙে চারতলায় পৌঁছয় তারা। কিন্তু প্রচণ্ড ধোঁয়ায় আগুনের উৎসের কাছে পৌঁছতে অনেকটা সময় লেগে যায়। ধোঁয়া বার করতে ওই অফিসটির পাশাপাশি অন্য ক’টি অফিসের কাচও ভাঙতে হয়। ব্যবহার করা হয় ‘স্মোক এক্সট্রাকটর’। প্রাথমিক ভাবে দমকলের অনুমান, এসি-তে শর্ট সার্কিটের জেরে আগুন লাগে। অফিসের জানলাগুলি বন্ধ থাকায় ধোঁয়া বেরোতে পারেনি।
ঘটনাস্থলে যান দমকলের এক আধিকারিক তরুণ সিংহ। তিনি বলেন, “ওই বহুতলটিতে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থার অনেক কিছুই আছে। কিন্তু কোনওটাই কাজে লাগেনি। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেগুলি অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে।” তবে দমকল জানিয়েছে, ওই বহুতলটিতে বাতানুকুল ব্যবস্থা কেন্দ্রীয় ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। সে জন্য হাওয়া চলাচলের অতিরিক্ত পথ (ভেন্টিলেশন সিস্টেম) ছিল কি না এবং অন্য অগ্নিবিধি মানা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।