ডেভিড ব্লেসিংস।
কোকেন-সহ কলকাতা বিমানবন্দর থেকে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবি) হাতে ধরা পড়েছিলেন নাইজিরীয় এক যুবতী। গত জুলাইয়ে তাঁকে নিয়ে হইচই হয় যথেষ্ট। নিজের যোনির ভিতরে এমন ভাবে কোকেন লুকিয়ে এনেছিলেন তিনি যে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। দমদম জেলে বন্দি সেই ডেভিড ব্লেসিংস সম্পর্কে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা পড়তে চলেছে চলতি মাসে।
সম্প্রতি বিমানবন্দর থানায় ৩০ বছরের ওই তরুণীর বিরুদ্ধে জাল পাসপোর্ট ব্যবহারের অভিযোগ দায়ের করেছিল এনসিবি। অভিযোগ, গ্রেফতারের সময়ে ব্লেসিংসের কাছে যে পাসপোর্ট ছিল সেটি জাল। তদন্তের অঙ্গ হিসেবে ব্লেসিংসের পাসপোর্ট সম্পর্কে বিশদ তথ্য যোগাড়ের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এনসিবি। তখনই জানা যায় এই তথ্য।
এনসিবি সূত্রের খবর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা জানতে পারে, ডেভি়ড ব্লেসিংস নামে এক নাইজিরীয় যুবতী ভারতে এসেছেন। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নথি অনুযায়ী সেই পাসপোর্টের নম্বরের সঙ্গে ব্লেসিংসের থেকে বাজেয়াপ্ত পাসপোর্টের নম্বর মিলছে না। যত বিদেশি ভারতে আসেন, এ দেশে ঢোকার সময়ে তাঁদের সম্পর্কে কিছু নথি জমা হয় ব্যুরো অব ইমিগ্রেশনের কাছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস প্রয়োজনে কোনও বিদেশির উপরে নজরদারিও চালাতে পারে। ব্যুরো অব ইমিগ্রেশন সূত্রের খবর, ব্লেসিংসের পাসপোর্টে যে ভারতীয় ভিসা রয়েছে সেটিও জাল।
পুলিশ সূত্রের খবর, এনসিবি-র কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তারা তদন্ত করছে। প্রয়োজনে বিদেশ মন্ত্রকের মাধ্যমে নাইজিরীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্লেসিংসের থেকে বাজেয়াপ্ত করা পাসপোর্টের তথ্য পাঠানো হবে। জেলে গিয়েও ব্লেসিংসকে জেরা করা হতে পারে।
এনসিবি-র তদন্তকারীদের মতে, ব্যুরো অব ইমিগ্রেশনের তথ্য অনুযায়ী ব্লেসিংস ভারতে ঢোকেন আসল পাসপোর্ট ও ভিসা নিয়ে। অনুমান, তিনি মুম্বই দিয়ে ঢোকেন। এ দেশে যেহেতু মাদক পাচার করতে এসেছিলেন, তাই এখানকার কোনও দালাল মারফত একটি জাল পাসপোর্ট বানিয়ে নেন। ভিসাটাও তাই জাল বানাতে হয়। ওই জাল পাসপোর্টে কয়েকটি অন্য দেশের অভিবাসন স্ট্যাম্প রয়েছে। সেগুলিও জাল বলছেন তদন্তকারীরা। মুম্বইয়ে কোনও এক পরিচিতের কাছে আসল পাসপোর্ট আছে বলে তদন্তকারীদের অনুমান।
এনসিবি সূত্রের খবর, ব্লেসিংস সম্পর্কে চূড়ান্ত রিপোর্টেই জাল পাসপোর্টের বিষয়টি উল্লেখ থাকবে। পুলিশ এ নিয়ে তদন্ত করে আলাদা করে চার্জশিট দেবে আদালতে।