বি বা দী বাগের কাছে ব্রেবোর্ন রোডে থমকে যাওয়া ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের জট খুলল।
দিন কয়েক আগে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে কলকাতার পুর কমিশনারকে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়, ওই পথে মেট্রোর কাজ চালু হলে কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। পুর প্রশাসনকে সেই সব বাড়ি খালি করার আবেদন জানান মেট্রোকর্তারা। কী ভাবে তা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল পুরসভা। তার জেরে ওই প্রকল্প ঘিরে ফের অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
ওই জট কাটাতে শুক্রবার পুর ভবনে বৈঠক ডেকেছিলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেখানে মেট্রোর তরফে কেএমআরসিএল (কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড)-এর একাধিক পদস্থ অফিসার, পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, পুর কমিশনার খলিল আহমেদ ও কলকাতা পুলিশের একাধিক ডেপুটি কমিশনার-সহ অন্য অফিসারেরা হাজির ছিলেন।
মেয়র জানান, মেট্রো রেলের কাজ সম্পূর্ণ হলে শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হবে। সে কথা মাথায় রেখেই পুরসভা অন্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওই কাজে রেলের সঙ্গে সহযোগিতা করবে। জুনের শুরুতেই কাজ শুরু হবে।
মেট্রোর তরফে কেএমআরসিএল পুরসভাকে চিঠি দিয়ে বলেছিল, সুড়ঙ্গ খোঁড়ার জন্য ব্রেবোর্ন রোড, পুরুষোত্তম রায় রোড, স্ট্র্যান্ড রোড, আর্মেনিয়ান রোড, নেতাজি সুভাষ রোড-সহ বিভিন্ন রাস্তার উপরে থাকা গোটা পঁচিশেক বহুতলের বাসিন্দাদের অবিলম্বে সরাতে হবে। তাতেই আপত্তি জানায় পুরসভা।
কী ভাবে খুলল মেট্রোর জট? মেয়র বলেন, ‘‘১৫ দিনেই সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে মেট্রো রেল জানিয়েছে।’’ ওই সুড়ঙ্গ যাবে ব্রেবোর্ন রোড উড়ালপুলের নীচ দিয়ে। তাতে ওই উড়ালপুলে কত দিন যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে হবে, তা জানতে চায় পুরসভা। মেয়র জানান, তিন দিনের মধ্যে উড়ালপুলের নীচে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শেষ হয়ে যাবে। ওই তিন দিন উড়ালপুলে যান চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে জানান মেয়র।
আগামী সপ্তাহেই ওই বাড়িগুলি চিহ্নিত করে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যেতে অনুরোধ করা হবে বলে এ দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মেয়র জানান, ওই বাসিন্দাদের অস্থায়ী আবাস খুঁজে দেবেন কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার এবং পুর প্রশাসন সর্বতোভাবে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করবে।
ওই সব রাস্তার উপরে থাকা একাধিক হেরিটেজ বাড়ি নিয়েও এ দিন আলোচনা হয়। এ প্রসঙ্গে মেয়র জানান, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ-কে ইতিমধ্যেই বিষয়টি জানিয়েছে মেট্রো। ওই সব বাড়ির ব্যাপারে পুরসভা বা সরকারের কিছু করার নেই বলে জানান মেয়র।
যে সব বাড়ি থেকে লোক সরানো হবে, সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময়ে তার কোনওটা ভেঙে পড়লে কী হবে? মেয়র জানান, ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবে মেট্রো। শিবপুর ও যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারেরা ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি পরিদর্শন করে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ঠিক করবেন। মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ সেই ক্ষতিপূরণের বিষয়টি দেখবে। মেয়র বলেন, ‘‘কাজ খুব দ্রুত এগোচ্ছে। ইতিমধ্যেই স্ট্র্যান্ড রোডের মুখে চলে এসেছে মেট্রোর সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ।’’ মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানান, বাড়ির বাসিন্দারা সরলেই কাজ শুরু হবে।