কারখানার জন্য প্রয়োজন ছিল ট্রেড লাইসেন্সের। পুরসভার লাইসেন্স দফতরে জমির খাজনার রসিদ জমা দিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। কিন্তু সেই রসিদটি পরীক্ষা করতে গিয়েই ‘গোলমেলে’ লেগেছিল দফতরের কর্মীদের। এর পরেই কম্পিউটারে রসিদের নম্বর দিয়ে ফের পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা গেল সেটি আসলে জাল!
বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়া পুরসভায়। নকল খাজনার রসিদ জমা দিয়ে ট্রেড লাইসেন্সের আবেদন করার অভিযোগে সাঁকরাইল স্টেশন রোডের বাসিন্দা অমর মেটেকে গ্রেফতার করেছে হাওড়া থানার পুলিশ। পুরসভার তরফে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কয়েক দিন আগেই হাওড়া পুরসভার বালি শাখা অফিসে জন্মের শংসাপত্রে এমনই জালিয়াতি ধরা পড়েছিল। সেক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল সাবেক বালি পুরসভা থেকে এক মহিলার তিন সন্তানের জন্মের শংসাপত্র দেওয়া হলেও পুরসভা পরিচালিত হাসপাতালে তার কোনও নথিই নেই। জন্মের শংসাপত্র সংক্রান্ত ওই গরমিলের বিষয়টি নিয়ে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখা তদন্ত করছে।
পুরসভা সূত্রে খবর, এ দিন দুপুরে পুরসভার লাইসেন্স দফতরে আসেন অমরবাবু। তিনি লিলুয়া এলাকার ৫৫/১ বি রোডে একটি জমিতে কারখানার জন্য ট্রেড লাইসেন্স করাতে এসেছিলেন। নিয়ম মাফিক অন্য নথির সঙ্গে জমির খাজনার রসিদও জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু রসিদে থাকা জমির মালিকের নাম দেখে সন্দেহ হয় দফতরের এক কর্মীর। কিছু দিন আগেই ওই জমির যে খাজনা জমা পড়েছিল তাতে মালিক হিসেবে দু’জনের নাম ছিল। তখন খাজনা জমা নেন ওই কর্মীই। সন্দেহ হওয়ায় তিনি রসিদের নম্বরটি (৯৩৩৭) কম্পিউটারে পরীক্ষা করেন। দেখা যায় পুরসভার নথিতে ওই জমির মালিক দু’জন। এমনকী বর্তমান আর্থিক বছরে জমির যে খাজনা জমা পড়েছে তাতেও দু’জনেরই নাম রয়েছে। অভিযোগ, এর পরে আসল বিষয়টি কী, তা জানতে চাইলে অমরবাবু পালানোর চেষ্টা করেন।
তবে পুরসভার কর্মীরা তাঁকে আটকে বিষয়টি মেয়র পারিষদ (লাইসেন্স) অরুণ রায়চৌধুরীকে জানান। তিনি থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে অমরবাবুকে গ্রেফতার করে। অরুণবাবু বলেন, ‘‘এই নকল খাজনার রসিদ দিয়ে যদি ট্রেড লাইসেন্স বেরিয়ে যেত, তবে ভবিষ্যতে মালিকপক্ষ পুরসভার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতেন। এ রকম আরও কিছু বিষয় নজরে এসেছে। মনে হচ্ছে কোনও চক্র কাজ করছে। উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের জন্য পুর কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের কাছে আবেদন করছি।’’
কোথা থেকে, কী ভাবে নকল খাজনার রসিদ বানানো হল তা অমরবাবুকে জেরা করে জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।