প্রতীকী ছবি।
চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট সংস্থায় সাধারণ চাকরি করার সুবাদে হিসেব থেকে ক্লায়েন্ট— সবই ছিল তার জানা। সেটাই কাজে লাগিয়ে নিজেকে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) পরিচয় দিয়ে আয়কর দফতরের হাত থেকে বাঁচানোর নামে ক্লায়েন্টদের থেকে কয়েক লক্ষ টাকা তুলেছিল সে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। লোক ঠকানোর অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ওই ভুয়ো সিএ-কে। ধৃতের নাম গৌরব সিংহ চোপারিয়া ওরফে গৌরব জৈন। তার বাড়ি হাওড়ায়। ইদানীং সে দক্ষিণ কলকাতায় থাকছিল। বৃহস্পতিবার তাকে ধরে পুলিশ। আজ, শুক্রবার ধৃতকে আদালতে তোলা হবে।
পুলিশের অনুমান, প্রতারণা করে গৌরব প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়েছে। তার কাছ থেকে প্রায় এক ডজন সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। নন্দকিশোর মোহতা নামে বড়বাজারের এক ব্যবসায়ী পুলিশে অভিযোগে জানান, গৌরব নিজেকে সিএ বলে পরিচয় দিয়ে আয়কর সংক্রান্ত কাজ করে দেওয়ার কথা বলে ১০ লক্ষ টাকাও নেয়। কিন্তু এর পরেই নিজের মোবাইলটি বন্ধ করে দেয় সে। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে ওই ব্যবসায়ী ১৯ অগস্ট পুলিশে যান।
তদন্তে জানা গিয়েছে, দু’বছর আগে গৌরব জৈন নামে এক যুবক বড়বাজারে দু’টি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট সংস্থায় ফাইফরমাস খাটত। কিন্তু গৌরবের সব সিম কার্ডে ভুল ঠিকানা থাকায় প্রথমে তার খোঁজ মেলেনি। চলতি সপ্তাহের গোড়ায় পুলিশ জানতে পারে নাইট ক্লাব ও পানশালায় দামি গাড়ি চেপে আসছে গৌরব। এর পরেই ফাঁদ পেতে ধরা হয় তাকে।
পুলিশের দাবি, গৌরবের বাবার বড়বাজারে মশলার ব্যবসা থাকলেও সপ্তম শ্রেণি অনুত্তীর্ণ ছেলের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। স্কুল থেকে বিতাড়িত হওয়ার পরে ফাইফরমাস খাটার চাকরি শুরু করে গৌরব। তখনই কাজের নিয়মকানুন রপ্ত করে সে। বছর দুই আগে চাকরি ছেড়ে দেয়। নিজেকে সিএ পরিচয় দিয়ে পুরোনো সংস্থার ক্লায়েন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সে দাবি করে, তার কথা মতো টাকা বিনিয়োগ করলে আয়করে সুবিধা হবে। পুলিশ জানায়, দামি গাড়িতে নামী সংস্থার পোশাক পরে ক্লায়েন্টদের সঙ্গে দেখা করত ধৃত। আদব-কায়দা দেখে কারও মনে প্রশ্ন উঠত না। ব্যবসায়ীরা টাকা দিতেন তাকে। টাকা পেয়েই মোবাইলের সিম কার্ড বদলে ফেলত গৌরব।