উদ্ধার হওয়া কামানের গায়ে খোদাই করা রয়েছে নির্মাণের বছর। নিজস্ব চিত্র।
তিন বারের চেষ্টায় সম্প্রতি দমদম সেন্ট্রাল জেল মোড়ের কাছে মাটি থেকে তোলা হয়েছিল সাড়ে দশ ফুটের প্রাচীন একটি কামান। সেটি পরিষ্কার করার পরে তার বাইরের দেওয়ালে যা ফুটে উঠেছে, তা দেখে উদ্ধারকারীদের দাবি, ওই কামানের সময়কাল সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।
রাজ্য সরকারের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জেনারেল অ্যান্ড অফিশিয়াল ট্রাস্টি বিপ্লব রায়ের নেতৃত্বে গত ৬ এপ্রিল ওই কামানটি তোলা হয়। এর পরে বন্দুক ও কামান বিশেষজ্ঞ অমিতাভ কারকুনের উপস্থিতিতে সেটির গায়ের নির্দিষ্ট কিছু অংশ ঘষতে ঘষতে ক্রমশ স্পষ্ট হয়েছে কিছু চিহ্ন। যা পড়া সম্ভব হয়েছে। অমিতাভের দাবি, কামানটিতে রানি ভিক্টোরিয়ার মুকুটের চিহ্ন খোদাই থাকার পাশাপাশি সেটি তৈরির বছর হিসাবে ‘1796’ সাল উল্লেখ করা আছে।
দীর্ঘদিন মাটির নীচে চাপা পড়ে থাকা কামানের গায়ের লেখা সর্বদা পাঠযোগ্য থাকে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সেই লেখা পড়া গিয়েছে। কামানের গায়ের চিহ্ন দেখে অমিতাভের দাবি, রানি ভিক্টোরিয়ার রাজত্বকালে ইংল্যান্ডের রয়্যাল গান ফ্যাক্টরিতে ১৭৯৬ সালে তৈরি হয়েছিল এই ঢালাই লোহার কামান। এটির নকশা করেছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ ইনস্পেক্টর জেনারেল অব আর্টিলারি টমাস ব্লোমফিল্ড। ৩২ পাউন্ড ওজনের গোলা বর্ষণকারী এই কামান সরকারি নির্দেশে ইংরেজদের সব যুদ্ধজাহাজে বসানো হয়েছিল। পাশাপাশি, এটি ব্যবহার করা হয়েছিল ভারতীয় উপমহাদেশে ইংরেজদের উপনিবেশ রক্ষার কাজেও। এমনকি, ব্রিটিশ পদাতিক গোলন্দাজ বাহিনীও এই নকশার কামান ভারতের বিভিন্ন যুদ্ধে ব্যবহার করেছিল।
অমিতাভ জানিয়েছেন, সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে তাঁদের অনুমান, সিপাহী বিদ্রোহের পরে কোনও এক সময়ে দমদম ক্যান্টনমেন্টের তৎকালীন পরিচালন কর্তৃপক্ষ নগরসজ্জার অঙ্গ হিসেবে ক্যান্টনমেন্টের প্রবেশদ্বারে এই কামানটি খাড়া ভাবে মাটিতে অর্ধপ্রোথিত রেখেছিলেন।