প্রস্তুতি: হাওড়ার যোগেশচন্দ্র স্কুলে চলছে জীবাণুনাশের কাজ। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
কোনও কোনও স্কুল জীবাণুনাশের কাজ দু’-এক দিন আগেই শুরু করেছিল। কেউ সোমবার থেকে তড়িঘড়ি শুরু করেছে সেই কাজ। কারণ, এ দিনই উত্তরবঙ্গ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, ১৬ নভেম্বর স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি এবং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে যাবে।
স্কুলগুলি জানিয়েছে, সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ২৯ অক্টোবরের মধ্যেই জীবাণুনাশের কাজ শেষ করার চেষ্টা করছে তারা। বিভিন্ন স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, খোলার আগে স্কুল চত্বর জীবাণুমুক্ত করা-সহ সব ধরনের করোনা-বিধি কী ভাবে পালন করতে হবে, শিক্ষা দফতরের সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকার অপেক্ষায় রয়েছে তারা। দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ থাকায় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বহু স্কুল ভবনেরই অবস্থা সঙ্গিন। এই পরিস্থিতিতে স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য শিক্ষা দফতর যে টাকা মঞ্জুর করেছিল, তা এখনও হাতে এসে পৌঁছয়নি বলেই জানিয়েছে এ রাজ্যের বেশ কিছু স্কুল।
এ শহরের অধিকাংশ স্কুল সোমবার থেকেই শুরু করে দিয়েছে জীবাণুনাশের কাজ। বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী বললেন, “ক’দিনের মধ্যেই মিড-ডে মিল দেওয়া হবে। তার জন্য স্যানিটাইজ়েশনের কাজ তো চলছেই। এ বার স্কুল খোলার আগে আলাদা করে স্যানিটাইজ় করার কাজ শুরু হবে।” উত্তর কলকাতার বিধাননগর রোড স্টেশনের কাছে সারদাপ্রসাদ ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা সঞ্চয়িতা চৌধুরী জানালেন, স্কুল খোলার ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জীবাণুনাশের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তাঁরা।
সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ও সরকার-পোষিত স্কুলের সঙ্গে রাজ্য জুড়ে ১৬ নভেম্বর খুলবে বেসরকারি স্কুলও। এ দিন স্কুল খোলার ঘোষণার পরে বেসরকারি স্কুলগুলিও প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে। ডিপিএস রুবি পার্কের অধ্যক্ষা জয়িতা চৌধুরী জানালেন,
জীবাণুনাশের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। স্কুল খুললে একটি ‘আইসোলেশন রুম’ও রাখবেন তাঁরা। স্কুলে ঢোকার মুখে থার্মাল গান দিয়ে প্রত্যেক পড়ুয়ার শরীরের তাপমাত্রা মাপা হবে। মাস্ক পরা তো বাধ্যতামূলক বটেই। সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বলেন, “কিছু দিন পরপরই স্কুল স্যানিটাইজ় করি আমরা। এখন স্কুল খোলার আগে কয়েক দিন সময় পাওয়া গেল। আরও ভাল করে স্যানিটাইজ় করা যাবে। পড়ুয়াদের কী ভাবে স্কুলে পাঠাবেন, অভিভাবকদের সে বিষয়ে সচেতন করা হবে।”
ডোমজুড়ের কেশবপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর দাস জানিয়েছেন, নিজেদের উদ্যোগেই স্কুল জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু করেছেন তাঁরা। আপাতত শিক্ষা দফতরের করোনা সংক্রান্ত নির্দেশিকার অপেক্ষায় আছেন। দীপঙ্করবাবু বলেন, “আমাদের স্কুলে শৌচালয়-সহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে মেরামতির দরকার। পানীয় জলের পাইপলাইনও সারাতে হবে। কিন্তু সেই টাকা এখনও হাতে পাইনি। স্কুল খোলার আগে কাজগুলি সেরে ফেলা খুব দরকার।”
নদিয়ার কৃষ্ণনগরের গাতরা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক সুব্রতকুমার ঘোষ বললেন, “ছেলেমেয়েদের কী ভাবে স্কুলে পাঠাবেন, সে বিষয়ে সচেতন করার জন্য অভিভাবকদের ইতিমধ্যেই স্কুলে ডাকা হয়েছে। তাঁদের নিয়ে একটি বৈঠক করা হবে। স্কুল স্যানিটাইজ় করার কাজ চলছে। তবে স্কুল মেরামতির, বিশেষ করে শৌচালয় সারানোর টাকা এখনও আমাদের স্কুল পায়নি।”