— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে অবশেষে একাদশ শ্রেণির বাংলা ও ইংরেজি বই স্কুলগুলিতে এসে পৌঁছেছে। যদিও বেশ কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, বই এলেও সংখ্যাটা অপ্রতুল। অর্থাৎ, যত সংখ্যক পড়ুয়া আছে, তত বই পাঠানো হয়নি। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বাংলা এবং ইংরেজি বই বিনামূল্যে দেওয়া হয় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ থেকে। বাকি পাঠ্যবই কিনতে হয়। প্রশ্ন উঠেছে, স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের বই কেন কম পাঠানো হবে? এত দিন অপেক্ষা করার পরেও কেন সমস্ত পড়ুয়া একসঙ্গে বই হাতে পাবে না?
এ বছর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে চালু হচ্ছে সিমেস্টার পদ্ধতি। একাদশে দু’টি এবং দ্বাদশে দু’টি সিমেস্টার হবে। পরীক্ষার পদ্ধতি যেমন পাল্টাচ্ছে, তেমনই পাঠ্যক্রমেও প্রচুর পরিবর্তন হচ্ছে বলে জানিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। একাদশ শ্রেণির আগের বইগুলির সঙ্গে নতুন পাঠ্যবইয়ের মিল প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে, নতুন বই হাতে না পেলে পড়াশোনা শুরু করতে পারছে না পড়ুয়ারা। শিক্ষকদের মতে, পুরনো বই দিয়ে কাজ চালিয়ে নেওয়ার মতো পরিস্থিতি এ বার নেই।
নারায়ণদাস বাঙুর মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বললেন, ‘‘প্রায় প্রতি বছরই এই সমস্যা হয় একাদশ শ্রেণিতে। যত সংখ্যক পড়ুয়া থাকে, পাঠ্যবই আসে তার চেয়ে কম সংখ্যায়। এর কারণ, দশম শ্রেণিতে যত জন পড়ুয়া আছে বলে আমাদের স্কুলের ওয়েবসাইটে লেখা থাকে, সেই হিসাব মতোই বই পাঠায় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। কিন্তু আমাদের স্কুলে অন্যান্য স্কুল থেকেও নতুন পড়ুয়ারা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। এর ফলে দেখা যায়, সকলে বই পাচ্ছে না।’’ সঞ্জয় জানান, গত কয়েক বছর ধরে এই সমস্যাটা চললেও এত দিন পুরনো বই দিয়ে কোনও মতে কাজ চালিয়ে নেওয়া হত। এ বছর যে হেতু পাঠ্যক্রম অনেক বদলেছে, তাই পুরনো বই দিয়ে কাজ চালানো যাবে না। দ্য খিদিরপুর অ্যাকাডেমির ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শেখ মহম্মদ সালেহিন বলেন, “পড়ুয়াদের পাশাপাশি নতুন পাঠ্যক্রমের বাংলা ও ইংরেজি বই পাওয়া দরকার শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও। না হলে তাঁরা পড়াবেন কী করে? তাঁদের কাছেও বই নেই।’’ প্রধান শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, স্কুলে বই নেই, কিন্তু বাজারে সরকারের এই বিনামূল্যের বাংলা, ইংরেজি বই দেদার বিক্রি হচ্ছে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘স্কুলগুলি বইয়ের যেমন রিকুইজ়িশন পাঠায়, সেই অনুযায়ী বই পাঠানো হয়। নতুন কত জন ভর্তি হতে পারে, তার একটা আনুমানিক সংখ্যা জানালে এই সমস্যা হবে না। অনেক স্কুলই নতুন কত জন ভর্তি হতে পারে, তা হিসাব করে সেই অনুযায়ী বইয়ের রিকুইজ়িশন পাঠিয়েছে। সেই সব স্কুল কিন্তু কম বই পায়নি।’’ বিনামূল্যের সরকারি বই দোকানে বিক্রি হচ্ছে কী ভাবে? এ প্রশ্নের উত্তরে চিরঞ্জীব বলেন, ‘‘এমন হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’’