ধাপার মাঠে স্তূপীকৃত জঞ্জাল। ফাইল চিত্র
বায়ো মাইনিং পদ্ধতিতে তিন মাসে ধাপায় প্রায় ২৫ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ করেছে কলকাতা পুরসভা। কঠিন বর্জ্য সামাল দিতে স্বল্পকালীন পরিকল্পনার ভিত্তিতেই তা করা হয়েছে। এ ছাড়া সেখানে বায়ো-রেমিডিয়েশন (যে প্রক্রিয়ায় সজীব বস্তু অর্থাৎ লিভিং অর্গানিজ়ম ব্যবহার করে মাটি, জল বা কোনও এলাকার দূষণ কমানো হয় প্রক্রিয়ার কাজও চলছে। একটি মামলার প্রেক্ষিতে জাতীয় পরিবেশ আদালতে সম্প্রতি এমনই জানিয়েছে রাজ্য সরকার।
পরিবেশকর্মীদের একাংশ অবশ্য ধাপায় বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের পদ্ধতি নিয়েই সংশয় প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার যতই দাবি করুক না কেন, পুরো প্রক্রিয়া অত্যন্ত সীমিত জায়গায় হচ্ছে। অথচ ‘লেগ্যাসি ওয়েস্ট’ (দীর্ঘদিন ধরে যে আবর্জনা স্তূপীকৃত হয়ে রয়েছে) ঠিক ভাবে প্রক্রিয়াকরণ করতে পারলে তা থেকে জৈব সার-সহ অনেক কিছুই পাওয়া সম্ভব।
এ দিকে পুরসভা জানিয়েছে, বায়ো-রেমিডিয়েশনের কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার সঙ্গে চুক্তি আরও তিন মাস বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে কঠিন বর্জ্য পৃথকীকরণের কাজে ব্যবহৃত দু’টি যন্ত্র (ট্রমেল) কেনার জন্যও দরপত্র ডাকা হয়েছে। এক পুরকর্তা জানাচ্ছেন, বর্তমানে ধাপায় ৩০০ টিপিডি (টন পার ডে) ক্ষমতাবিশিষ্ট একটি ট্রমেল কাজ করছে। আরও দু’টি সম ক্ষমতার ট্রমেল কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, ধাপায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে দীর্ঘকালীন ভিত্তিতেও পরিকল্পনা করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ভাগাড়ের প্রায় ৪০ লক্ষ মেট্রিক টন বর্জ্য বায়ো মাইনিং পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াকরণের কথা চলছে। সেই সংক্রান্ত দরপত্র গত জানুয়ারিতেই ডাকা হয়েছিল। ফেব্রুয়ারিতে টেকনিক্যাল বিডও খোলা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিড-ইভ্যালুয়েশন কমিটি দরপত্রে নির্বাচিত সংস্থার থেকে বাড়তি কিছু নথিপত্র চেয়েছিল। লকডাউন শুরু হওয়ায় সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি বলে জানাচ্ছেন আধিকারিকেরা।
যদিও মামলার আবেদনকারী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের মতে, ‘‘এত দিন এই বর্জ্য অনাদরে ফেলে রাখা হয়েছে। অথচ ঠিক ভাবে প্রক্রিয়াকরণ করলে তা সম্পদ হয়ে উঠতে পারত। সরকারের এটা গাফিলতি।’’ অন্য এক পরিবেশকর্মীর কথায়, ‘‘রোজ শহরে যে পরিমাণ বর্জ্য উৎপন্ন হয়, তার প্রক্রিয়াকরণ যদি বিজ্ঞানসম্মত ভাবে হয়, তা হলে তা থেকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য অনেক কিছুই পাওয়া সম্ভব।’’