Kestopur-Bagjola

কেষ্টপুর-বাগজোলা খালের দূষণ নিয়ে রাজ্যকে ‘বিঁধল’ পরিবেশ আদালত

রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে সেই তহবিল থেকে কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় খামতি দূর করার জন্য অর্থ খরচ করতেও বলা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:১২
Share:

দুই খালের দু’ধারের জবরদখল নিয়ে সরকারি কোন দফতর উত্তর দেবে, তা নিয়েও জটিলতা রয়েছে। — ফাইল চিত্র।

কঠিন ও তরল বর্জ্যের ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার জন্য দু’বছর আগে রাজ্য সরকারের উপরে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পরিবেশগত ক্ষতিপূরণ ধার্য করেছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। নির্দেশ দিয়েছিল, সরকারকে পৃথক তহবিল তৈরি করে ওই টাকা জমা রাখতে হবে। রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে সেই তহবিল থেকে কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় খামতি দূর করার জন্য অর্থ খরচ করতেও বলা হয়েছিল। সেই মতো রাজ্য সরকার সংশ্লিষ্ট তহবিল তৈরি করে। কিন্তু পরিবেশগত ছোটখাটো প্রকল্পের জন্যও সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ওই তহবিলের অর্থ খরচ করতে সরকারের এত ‘অনীহা’ কেন? কেন বার বার তহবিলের অর্থ খরচ করতে সরকারের তরফে ‘অসহায়তা’ প্রকাশ করা হচ্ছে?

Advertisement

কেষ্টপুর-বাগজোলা খালের দূষণ সংক্রান্ত একটি মামলায় রাজ্য সরকারের দিকে এই প্রশ্নগুলোই ছুড়ে দিয়েছে পরিবেশ আদালত। সেই সঙ্গে নিকাশি পরিশোধন‌ প্লান্ট (সুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা এসটিপি) তৈরির জন্য দরপত্র ডেকেও সাড়া না পাওয়া, এসটিপি তৈরির জমি পাওয়া নিয়ে জটিলতা, সরকারি দীর্ঘসূত্রতা, প্রকল্পের জন্য অর্থের অভাব— এমন একাধিক বিষয়ে মুখ্যসচিবকে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মামলায় পরিবেশ আদালতের তরফে যে পর্যবেক্ষণ ধরা পড়েছে, তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে।

যেমন, পরিবেশ আদালত এক জায়গায় বলেছে, পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়গুলিকে সরকার একেবারেই গুরুত্ব সহকারে দেখছে না। দুই খালের দু’ধারের জবরদখল নিয়ে সরকারি কোন দফতর উত্তর দেবে, তা নিয়েও জটিলতা রয়েছে। যার পরিপ্রক্ষিতে মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘এটা সরকারের চূড়ান্ত গাফিলতি ছাড়া কিছু নয়। না হলে কেন সরকারের কোন দফতর কোন সমস্যার উত্তর দেবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকবে? এই ধরনের কার্যকলাপগুলোই আসলে প্রমাণ করে, পরিবেশকে কতটা হেলাফেলার সঙ্গে দেখে সরকার!’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, সংশ্লিষ্ট মামলায় সরকারের তরফে আদালতে এসটিপি তৈরির জন্য দরপত্র ডেকেও সাড়া না পাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। যার উত্তরে আদালত রাজ্যের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে, দরপত্রে কোনও সংস্থা এগিয়ে না এলে কি সরকার অসহায়ের মতো বসে থাকবে? এসটিপি তৈরির জমি নিয়েও জটিলতার কথা বলা হয়েছিল সরকারের তরফে। সে ক্ষেত্রে পরিবেশ আদালতের প্রশ্ন, জমি না পেলে কি সরকার প্লান্ট তৈরি করবে না? খালপাড়ে সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়ে অর্থের অনুমোদন করতে কেন দেরি হচ্ছে, কেনই বা খালপাড়ের জবরদখলকারীর সংখ্যা নির্ধারণ, সেখান থেকে তাঁদের উৎখাত করা বা তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা নিয়ে সরকারি তরফে নির্দিষ্ট সময়সীমার উল্লেখ করা হয়নি, সেই প্রশ্নও তুলেছে আদালত।

অর্থাৎ, প্রকল্পের বাস্তবায়নে সরকারি তরফে দেওয়া অধিকাংশ যুক্তি নস্যাৎ করে দিয়েছে আদালত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সমস্ত বিষয় উল্লেখ করে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে হলফনামা দিতে বলা হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী পয়লা এপ্রিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement