Singer KK Death

Singer KK Death: তাণ্ডবের সাক্ষী ভাঙা চেয়ার, দরজার হাতল

রবীন্দ্র সরোবরের এক নম্বর গেট দিয়ে ঢুকে দেখা গেল, ভিআইপি গেটের হাতল ভাঙা। দরজার কব্জাও যেন কেউ প্রবল আক্রোশে উপড়ে ফেলেছে।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২২ ০৭:০৮
Share:

উচ্ছৃঙ্খল: নজরুল মঞ্চে ভাঙচুরের চিহ্ন। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।

দরজার পাশেই পড়ে থান ইট, বাঁশের টুকরো। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে দরজার ভাঙা হাতল, ভেঙে যাওয়া আসন, উপড়ে নেওয়া অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র। সঙ্গীত তারকা কেকে-র অনুষ্ঠানের প্রায় ২০ ঘণ্টা পরের ফাঁকা নজরুল মঞ্চ যেন আস্ত ‘যুদ্ধক্ষেত্র’! বুধবার ওই চত্বর দেখে মনে হবে, যেন কেউ বা কারা তাণ্ডব চালিয়েছে। যা প্রশ্ন তুলছে, গানের অনুষ্ঠানে কেন এই তাণ্ডব? কেনই বা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিলেন না পুলিশ ও উদ্যোক্তারা?

Advertisement

রবীন্দ্র সরোবরের এক নম্বর গেট দিয়ে ঢুকে দেখা গেল, ভিআইপি গেটের হাতল ভাঙা। দরজার কব্জাও যেন কেউ প্রবল আক্রোশে উপড়ে ফেলেছে। এ দিন নজরুল মঞ্চের এক কর্মী চন্দন মাইতি জানালেন, এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে মঙ্গলবার সেখানকার সাতটি গেটের সামনে এত ভিড় হয় যে, শো শুরুর পরে গেট প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। কেউ দরজার হাতল ভেঙে দেন, কেউ কব্জা! তাই স্থির হয়, উন্মত্ত জনতার জন্য খুলে দেওয়া হবে সব ক’টি গেট। চন্দন আরও জানান, নজরুল মঞ্চের আসন সংখ্যা ২৪৮২। কিন্তু স্যর গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের ফেস্টে গাইতে আসা কেকে-র অনুষ্ঠানে প্রায় তিন গুণ বেশি শ্রোতা ঢোকেন। তার পরেও ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। প্রতিটি গেটে তখন জনস্রোত।

নজরুল মঞ্চের তিন নম্বর গেটের সামনেও দেখা গেল, ঢুকতে চেয়ে উন্মত্ত জনতার যুদ্ধের চিহ্ন। গেটের পাশে রাখা অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্রের একাংশ উপড়ে এসেছে। ওই গেটে ডিউটি করা এক কর্মী জানালেন, ভিতরে ঢুকতে চাওয়া জনস্রোতকে ছত্রভঙ্গ করতে ওই যন্ত্র দিয়ে গ্যাস স্প্রে করা হয়। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি আরও অশান্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ, এর পরেই জনতা ইট, বাঁশের টুকরো ছুড়তে শুরু করে। বুধবার দুপুরেও সেখানে পড়ে কয়েকটি আধলা ইট। কিন্তু শ্রোতারা বাঁশের টুকরো পেলেন কোথা থেকে? কর্মীরাই জানালেন, সেখানে মাঠের মধ্যে রাখা বাঁশের টুকরো কেটে তা-ই ছোড়া হয়। শুধু এটুকুই নয়। গেটের সামনে স্তম্ভ থেকে নতুন বসানো টালিও উপড়ে নেওয়া হয়। প্রেক্ষাগৃহের ভিতরেও ছড়িয়ে তাণ্ডবের নিদর্শন— পড়ে আছে ইটের টুকরো, পিছনের কয়েকটি আসন ভেঙে ঝুলছে। তবে সেখানে অধিকাংশ ইট সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

Advertisement

তাণ্ডবের এই ছবিটা অবশ্য এক মুহূর্তে আবছা হয়ে যায় মঞ্চে উঠলে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই মঞ্চেই শ্রোতাদের মাতিয়ে রেখেছিলেন কেকে। বুধবার সেই মঞ্চ শান্ত, নিস্তব্ধ। খান কুড়ি গান লেখা একটি তালিকা তখনও আটকানো মঞ্চের মেঝেতে। সেখানে গানের প্রথম লাইন পেন দিয়ে লেখা। যা নাকি লিখেছিলেন খোদ কেকে-ই। জীবনের শেষ অনু্ষ্ঠানে ওই তালিকা দেখেই গান গেয়ে যান শিল্পী। ‘হম রহে ইয়া না রহে কাল’— তালিকায় লেখা শেষ গানটি গেয়েই মঞ্চ থেকে বিদায় নেন কেকে।

বুধবার দেখা গেল, মঞ্চে সেই তালিকার পাশে ফুলের তোড়া রেখে গিয়েছেন কেউ। শিল্পীর এক অনুরাগী বললেন, ‘‘কেকে নেই। কিন্তু এই গানগুলো রয়ে গিয়েছে। হয়তো এর পরে সেগুলিই গাইবেন অন্য কেউ। এ ভাবেই থেকে যাবেন কেকে ও তাঁর গাওয়া গান।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement