প্রতীকী ছবি।
বেপরোয়া গতিতে চালাতে গিয়ে মোটরবাইকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ডিভাইডারে সজোরে ধাক্কা মেরেছিলেন চালক। বাইকের গতি এতটাই বেশি ছিল যে, ডিভাইডারে ধাক্কা খেয়ে শূন্যে উঠে যান তিনি। সেখান থেকে লোহার ডিভাইডারের ত্রিকোণ ছুঁচলো অংশের উপরে এসে পড়ে তাঁর গলা। আর তার জেরেই ধড় থেকে মাথা আলাদা হয়ে যায় চালকের।
দুর্গাপুজোর সময়ে চতুর্থীর রাতে ইএম বাইপাসের মেট্রোপলিটন লেনের কাছে দুর্ঘটনায় দেহ থেকে মাথা আলাদা হয়ে গিয়েছিল ইন্দ্রজিৎ দে নামে এক যুবকের। সেই মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নেমে এমনটাই জানতে পেরেছেন পুলিশ অফিসারেরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, রাত আড়াইটে নাগাদ স্ত্রী শুভ্রাকে নিয়ে মোটরবাইকে চেপে সায়েন্স সিটি থেকে চিংড়িঘাটার দিকে আসছিলেন ইন্দ্রজিৎ। মেট্রোপলিটন লেনের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ডিভাইডারে ধাক্কা মারেন তিনি। বাইক থেকে ছিটকে পড়েন স্বামী-স্ত্রী। দুর্ঘটনার অভিঘাতে ইন্দ্রজিতের শরীর থেকে মাথা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ওই ঘটনা দেখে প্রাথমিক ভাবে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশকর্মীরা। কী ভাবে একটি বাইক-দুর্ঘটনায় চালকের দেহ এবং মাথা আলাদা হয়ে যেতে পারে, তা বুঝতে না পারলেও অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার তদন্তে উঠে আসে গোটা বিষয়টি।
পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, যেখানে ওই রাতে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, সেই এলাকাটি সিসি ক্যামেরার আওতার বাইরে। ফলে দুর্ঘটনার কোনও ফুটেজ ক্যামেরাবন্দি হয়নি। কিন্তু ডিভাইডারের যে অংশে বাইকটি ধাক্কা মেরেছিল, তার কাছেই ত্রিকোণ ছুঁচলো অংশে লেগে ছিল রক্ত এবং মৃত চালকের জামার কলারের খানিকটা অংশ। যা দেখে তদন্তকারীদের ধারণা, ওই ছুঁচলো অংশে ধাক্কা লাগার জেরে এমন ঘটে থাকতে পারে।
ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, বাইপাসের ওই এলাকায় গাড়ি এবং বাইকের গতি নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যেই একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ডিভাইডারের গায়ে লাল-সাদা রিফ্লেক্টর থেকে শুরু করে স্পিড গান পর্যন্ত রয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, তা সত্ত্বেও ওই দিন বাইকটি ঘণ্টায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার বেগে যাচ্ছিল।
উল্লেখ্য, শহরে বেপরোয়া বাইকের দৌরাত্ম্য রুখতে সেগুলি বাজেয়াপ্ত করে থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। এমন ক্ষেত্রে বাইকের সব নথি দেখালে তবেই থানা থেকে তা ফেরত পাওয়া যাবে। পুলিশকর্তাদের দাবি, এই ব্যবস্থায় কিছুটা সুফল মিলেছে।