পার্কে প্রচার। ছবি: শৌভিক দে।
নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, প্রচারে ততই অন্যকে টেক্কা দিয়ে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেওয়ার চেষ্টা করছে রাজনৈতিক দলগুলি। পাল্লা দিয়েই চলছে বিধি ভেঙে সরকারি সম্পত্তি দখল করে প্রচার। সল্টলেক হোক বা রাজারহাট, বাগুইআটি— রাস্তার ডিভাইডারের রেলিং থেকে পাম্প হাউস, বাতিস্তম্ভ থেকে জলের ট্যাঙ্ক, সর্বত্র ঝোলানো তৃণমূল, সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস প্রার্থীদের ফ্লেক্স, হোর্ডিং, পতাকা।
৩ অক্টোবর বিধাননগর পুর-নিগমের নির্বাচন। সল্টলেকের মতো পরিকল্পিত এলাকার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে বাগুইআটি, কেষ্টপুর, তেঘরিয়া, কৈখালি, রাজারহাটের মতো অপরিকল্পিত ভাবে নগরায়ন হওয়া স্থান। ফলে সল্টলেকে হোর্ডিং, ব্যানার ঝোলানোয় খানিকটা রাখঢাক করলেও সল্টলেকের বাইরের এলাকায় কোনও কিছুরই ধার ধারছে না কোনও দলই। সল্টলেক, পাঁচ নম্বর সেক্টর, নিউ টাউন, বাগুইআটি, রাজারহাট-গোপালপুরের প্রত্যন্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেল, বড় রাস্তার তুলনায় অলিগলির বাতিস্তম্ভ দখল করে পতাকা, ফেস্টুনের প্রবণতাই বেশি। রাজপথ, ফুটপাথ বা রাস্তার ধারে বাঁশ পুতে হোর্ডিং লাগানো হচ্ছে।
পুর-নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার পবন কাডিয়ালের দাবি, সরকারি জায়গা থেকে রাজনৈতিক দলগুলির ব্যানার, ফ্লেক্স খুলে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে অভিযান হচ্ছে। তবে স্থানীয়দের পাল্টা দাবি, কমিশনের লোকজন পিছন ফিরলেই ফের ওই জায়গা ভরে যাচ্ছে।
এ ভাবে সরকারি জায়গা ‘দখল’ করে প্রচার যে নিয়ম বিরুদ্ধ, তা জানেন প্রতিটি দলের নেতৃত্বই। তবুও কম খরচে প্রচারের আর মাধ্যম মেলে না বলে এমনটা করতে হয় বলে দাবি তাঁদের।
তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি, তৃণমূল গরিবের দল। খবরের কাগজ বা টিভিতে বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষমতা তাঁদের প্রার্থীদের নেই। তিনি বলেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলুক। মহকুমা শাসক প্রচারের সরঞ্জাম সরিয়ে নিন। কিন্তু দিনে দু’-তিন ঘণ্টা রেলিং, লাইট পোস্টে পতাকা, ফ্লেক্স ঝোলানোর অনুমতি দিন আমাদের। এত অল্প সময়ে মানুষের কাছে পৌঁছনোর আর কোনও মাধ্যম নেই।’’
নির্বাচনী বিধি ভেঙে যে প্রচার চলছে, তা কার্যত মেনে নিয়ে কংগ্রেসের উত্তর ২৪ পরগনার সভাপতি তাপস মজুমদার বলেন, ‘‘প্রার্থীদের বলা হয়েছে লাইট পোস্ট থেকে পতাকা ফেস্টুন খুলে নিতে। পরিবর্তে, আবাসিকদের অনুমতি নিয়ে বিভিন্ন বাড়ির দেওয়াল ব্যবহার করা হোক। এ ভাবে প্রচার না করেও তো কোনও উপায় নেই।’’ সিপিএমের রাজারহাট (শহর) আঞ্চলিক শাখার সম্পাদক শুভজিৎ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘প্রথমে তৃণমূল সরকারি জায়গা ব্যবহার করছিল। ফলে নিজেদের উপস্থিতি জানাতে অন্য দলগুলিও তা-ই করছে। প্রশাসন ওই সব পতাকা-ফেস্টুন খুলে দিলে দেবে।’’