‘ম্যাজিক’ শব্দটা শুনলেই ক্লাস ফোরের তিন্নির ছটফটানি বেড়ে যায়। গত বছর স্কুলে ম্যাজিক দেখেছিল সে। তার পরে ঠাকুমার কাছে জাদুকরের গল্প শুনলেও ম্যাজিক আর দেখা হয়নি তার। কিন্তু ম্যাজিক দেখার জন্য তিন্নিকে আর বেশি অপেক্ষা করতে হবে না।
এ বার পুজোয় আহিরীটোলা যুবক বৃন্দের মণ্ডপে গেলেই ম্যাজিক দেখতে পাবে তিন্নিরা। ৪৪ বছরের পুরনো এই পুজোর এ বারের থিম ‘ভগবানের দানে মানুষের সৃষ্টিতে ম্যাজিক’। উদ্যোক্তারা জানালেন, মণ্ডপ সাজছে জাদুবিদ্যার বিভিন্ন গল্প, উপকরণ দিয়ে।
হোলির আগে হরিয়ানার গ্রামে হয় ‘সাঁজিমাতা’র পুজো ও উৎসব। এই লোক উৎসবকেই এ বার মণ্ডপ সজ্জায় ফুটিয়ে তুলছে দমদম পার্ক তরুণ সংঘ পুজো কমিটি। সজ্জার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে পটচিত্র। পুজোর বিভিন্ন মুহূর্ত দেখা যাবে মণ্ডপে। পুজোর থিম ‘রঙে রাঙিয়ে মন মাতাতে, মা আসছেন অশুভের বিনাশে।’
মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে গল্ফগ্রিন শারদোৎসব কমিটির মণ্ডপ। পুজোর চার দিন চলবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সামাজিক কর্মসূচী। রানিকুঠির অভিযান ক্লাবের পুজোর থিম ‘আলোর রং মশাল’। মণ্ডপ সজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে শোলা দিয়ে তৈরি সরার উপর পটচিত্র এবং মাটির তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী।
৬৭তম বছরে পুঁটিয়ারি ক্লাবের পুজোর থিম ‘আদি শক্তিরূপেণ’। ভোজ্য তেলের টিনের বাক্স দিয়ে বিরাট এক পদ্মের আকারে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। মণ্ডপ জুড়ে থাকবে প্রাচীন কাল থেকে কাহিনীতে বর্ণিত মায়ের বিভিন্ন রূপ।
মায়েরই আর এক রূপ প্রকৃতি। তাই দক্ষিণের পাটুলি সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির পুজোর থিম ‘মাতৃরূপে প্রকৃতি’। ৪৯ বছরের পুরনো এই পুজোর মণ্ডপে দেখা যাবে পরিবেশ রক্ষার বিভিন্ন দৃশ্য। শুধু মণ্ডপ নয়, বৈচিত্র থাকছে প্রতিমাতেও। দুই টন লোহার টুকরো আর পাত দিয়ে তৈরি হচ্ছে এখানকার প্রতিমা।
শ্যামপুকুর আদি সর্বজনীন দুর্গোৎসবের মণ্ডপ সজ্জায় ব্যবহার করা হচ্ছে কাপড়ের উপরে আঁকা ছবি। বাঁশের মডেল এবং মাটির থালা-কলসির উপর দেখা যাবে দেবদেবীর বিভিন্ন বাহনের ছবি। পাতিপুকুর বিধানপল্লি অধিবাসীবৃন্দের মণ্ডপে উঠে আসছে নীলনদের তীরে প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার বিভিন্ন দৃশ্য। জাপানের জনপ্রিয় শিল্প ‘অরিগ্যামি’। সিআইটি রোড নব মিলনের মণ্ডপ সজ্জায় ব্যবহার করা হচ্ছে এই শিল্পরীতিতে তৈরি কাগজের বিভিন্ন জিনিস।
হাটখোলা সর্বজনীন দুর্গোৎসবের মণ্ডপে থাকছে বারোটি শিবলিঙ্গের মধ্যে মোমের প্রতিমা। শোভাবাজার বড়তলা সর্বজনীনের মণ্ডপ এ বার সাজানো হচ্ছে শহর থেকে হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন পতঙ্গ, পাখির মডেল দিয়ে। পুরনো রাজবাড়ির আদলে সাজছে বাগুইআটি উদয়ন সঙ্ঘের মণ্ডপ। রাজবাড়ির মন্দিরে হবে মায়ের আরাধনা।
দুই বাংলার লোকসংস্কৃতির ছোঁয়া পাওয়া যাবে চক্রবেড়িয়া সর্বজনীনের দুর্গোৎসবে। মণ্ডপ সাজছে বরণডালার উপচার ‘শ্রী’ দিয়ে। কড়ি ও নকশার রঙে রূপে ঝলমলিয়ে উঠবে মণ্ডপ।