Recruitment Scam

‘কালীঘাটের কাকু’-র বাড়িতে ইডির আধিকারিকেরা, তল্লাশি চালাচ্ছেন কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে

সম্প্রতি সিবিআইও তল্লাশি চালিয়েছিল তাঁর ফ্ল্যাটে। সে সময় কয়েক লক্ষ নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত হয়। তিনি অবশ্য দাবি করেন, বোন হাসপাতালে ভর্তি, চিকিৎসার বিল মেটানোর জন্য ওই অর্থ তুলেছিলেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৩ ০৮:৪৮
Share:
Kalighater Kaku

কালীঘাটের কাকুর বাড়িতে ইডির হানা। ফাইল চিত্র।

শনিবার সকালে ‘কালীঘাটের কাকু’-র বাড়িতে গেল ইডির একটি বড় দল। একাধিক দলে ভাগ হয়ে ‘কালীঘাটের কাকু’র বেহালার ফকিরপাড়া রোডের ফ্ল্যাট, বাড়ি, অফিস-সহ বহু জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলের সদস্যেরা। সম্প্রতি সিবিআই এসেও তল্লাশি চালিয়েছিল তাঁর ফ্ল্যাটে। সে সময় ‘কাকু’র বাড়ি থেকে কয়েক লক্ষ নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই। তিনি অবশ্য দাবি করেন, বোন হাসপাতালে ভর্তি, চিকিৎসার বিল মেটানোর জন্য ওই অর্থ তুলেছিলেন। পাওয়া যায় একটি অ্যাডমিট কার্ড। ‘কাকু’ দাবি করেন, সেটা তাঁর শ্যালিকার পুত্রের পুরসভায় চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রদত্ত অ্যাডমিট কার্ড। এ ছাড়া তাঁর একটি ফোনও বাজেয়াপ্ত করা হয়।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, শনিবারই আরও একটি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের তলব পেয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের সূত্রে ‘কালীঘাটের কাকু’র কথা প্রকাশ্যে এসেছিল। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছিল, ‘কালীঘাটের কাকু’র আসল নাম সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। সেই সুজয়কে এর আগে দু’বার তলব করেছিল সিবিআই। প্রথম বার হাজিরা দিলেও পরে তিনি নিজে হাজিরা দেননি। বদলে আইনজীবীকে দিয়ে নথিপত্র পাঠিয়ে দেন। সুজয় সে সময় জানান, তাঁর কাছে কিছু নথি চাওয়া হয়েছিল। সেগুলি আইনজীবীকে দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি নিজেই জানান, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি আইনজীবীর মাধ্যমে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

Advertisement

নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তাপস মণ্ডল সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছিলেন, অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় কুন্তল নাকি আশ্বাস দিয়ে বলতেন, ‘‘কালীঘাটের কাকুর সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে। চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’ ইডি সূত্রে খবর, পরে গোপাল দলপতি এবং তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, কুন্তলের ওই কালীঘাটের ‘কাকু’ রাজ্যের এক প্রভাবশালী শীর্ষ নেতার সংস্থার চিফ এগ্‌জ়িকিউটিভ অফিসার (সিইও)। তার পর থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আতশকাচের তলায় সুজয়। শনিবার আরও এক দফা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে ইডি সূত্রে খবর।

যদিও কুন্তল দাবি করেছেন, তিনি ওই ‘কাকু’কে চেনেন না। কুন্তল এ-ও দাবি করেন, যে সুজয়কে নিয়ে চর্চা চলছে, তিনি ‘কালীঘাটের কাকু’ নন। তাপস এবং কুন্তলের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের কারণে রহস্য আরও বেড়েছে। সুজয় নিজে সংবাদমাধ্যমের সামনে জানিয়েছিলেন, তাঁকে কেন ‘কালীঘাটের কাকু’ বলা হচ্ছে, তা তাঁর কাছে স্পষ্ট নয়। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তাঁর কাছে কোনও টাকা জমা পড়েনি বলেও দাবি করেন সুজয়। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমার কর্মস্থল নিউ আলিপুর। ‘কালীঘাটের কাকু’ কথাটা কোথা থেকে এল, আমার পক্ষে তো সেটা বলা সম্ভব নয়। যাঁরা এটা বলছেন, তাঁরাই এর ব্যাখ্যা দিতে পারবেন।’’

সুজয় আরও দাবি করেন, তাঁর ‘সাহেব’ তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০৯ থেকে তিনি অভিষেকের অফিসে চাকরি করছেন। সুজয় তখন বলেছিলেন, ‘‘পৃথিবীর কারও ক্ষমতা নেই আমার সাহেবকে ছোঁবে। কারণ তাঁর নাম কেউ করতে পারবেন না। তাঁর সঙ্গে কেউ দেখা করতে পারবে না, তাঁর সঙ্গে কেউ ফোনে কথা বলতে পারবেন না। আমার কাছ অবধি এসে থেমে যেতে হচ্ছে।’’ ঘটনাচক্রে, শনিবারই সিবিআইয়ের তলব পেয়েছেন অভিষেক এবং শনিবার সকালেই ইডির একটি দল সুজয়ের বাড়িতে হানা দিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement